
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার সাক্ষাৎ করেন
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে ইইউ রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে।
বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সবাই মনে করে যত দ্রুত সম্ভব দেশে জনগণের সরকার প্রয়োজন। যে সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। সেটা দ্রুত হলে দেশের অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।
খসরু বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বৈদেশিক সম্পর্ক এবং উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক, নির্বাচন এবং সংস্কার কমিশনের যে ঐকমত্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে কারও দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাদের দ্বিমত থাকার কথা নয়।
যে সকল জায়গায় ঐকমত্য হবে, সেগুলো আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। যেখানে ঐকমত্য হবে না, সেটা সাংবিধানিক বা হোক নির্বাচনসহ যে কোনো বিষয়, সেটা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জনগণের কাছে নিয়ে উপস্থাপন ও মতামত নিয়ে এসে সংসদে আলোচনা হবে, তর্ক-বিতর্ক হবে এবং পাস হবে।
খসরু বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে আলোচনা হচ্ছে নির্বাচন কবে হবে। দেশে কবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসবে। তিনি বলেন, ইউরোপ হচ্ছে আমাদের রপ্তানির সবচেয়ে বড় ডেস্টিনেশন। সেখানে আমরা আগামী দিনে কী কাজ করতে পারি এবং বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের কর্মপন্থা কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংস্কার ও নির্বাচনকে ঘিরে তারা সহযোগিতা করতে রাজি আছে।
খসরু বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে। সবাই ধরেই নিয়েছে ডিসেম্বরে পরে নির্বাচন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে অনেকে বলছে ডিসেম্বর অনেক দেরি। কিন্তু তারপরেও ডিসেম্বর ‘কাট অব টাইম’ হিসেবে ধরে নিয়েছে সবাই। সবার ধারণা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে আমরা সঠিক পথে থাকব।
খসরু বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তিনি বলেন, দেশে একটি সরকার আছে কিন্তু এখনো গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসেনি। সেটা না আসলে, জনগণ সমর্থিত একটা সরকার ব্যতীত কোনো অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, পুলিশ সাপোর্ট দিয়ে সেটা দাঁড়াতে পারবে না। সেটা আমরা লক্ষ্য করছি।
খসরু বলেন, জনগণের সমর্থিত সরকার, সংসদ- যা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করতে পারলে অনেক সমস্যা সমাধান হবে। অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এগুলো একটা পলিটিক্যাল উইং ছাড়া সমাধান করা কঠিন। এজন্য আলোচনায় এ বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
খসরু বলেন, ইইউতে আমাদের সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। তাই আগামী দিনে ইইউর সঙ্গে আমাদের কর্মপন্থা কী হবে তা আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে নির্বাচন ঘিরে, সংস্কার ঘিরে ইইউ সহযোগিতা করতে রাজি আছে। বিশেষ করে ইলেকট্রো প্রসেস থেকে শুরু করে যেসব প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে পড়েছে, তা সংস্কার, পরিবর্তন, এগুলো সঠিক জায়গায় ফিরে আনার জন্য তারা এগিয়ে আসতে রাজি আছে।