ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

বাঞ্ছারামপুরে বেইলি সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ১৯:২২, ২০ মার্চ ২০২৫

বাঞ্ছারামপুরে বেইলি সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট

ছবি: সংগৃহীত

 আসন্ন ঈদে ঘরমুখী মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেতু। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফতেপুর বেইলি সেতুর ওপর যানজটের কারণে নাকাল মানুষ। কারণ ঈদ উপলক্ষে রাস্তায় গাড়ির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন যানজট লেগে থাকছে ওই এলাকায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, শরীফপুর ফতেপুর গ্রামের মধ্যে একটি খালের ওপর ৯০ ফুটের মতো লম্বা বেইলি সেতুটি রয়েছে। সেতুর প্রস্থ ১০ ফুটের মতো। সেতুসংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে মাটি না থাকায় সরু হয়ে গেছে। যে কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেতুতে যানজট লেগে থাকছে। এখানে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ বা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। ফলে চালকদের মধ্যে আগে যাওয়ার একটা প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে। যে কারণে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-বাঞ্ছারামপুর-মুরাদনগর-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের ফতেপুর গ্রামে ২০০১ সালে ৯০ ফুট লম্বা ১০ ফুট প্রশস্ত একটি বেইলি সেতু করা হয়। সেতুটি সরু হওয়ায় পাশাপাশি দুটি বড় গাড়ি পার হতে পারে না। এতে প্রায়ই সেতুতে গাড়ি আটকা পড়ে যানজট তৈরি হয়। সেতুর দুই পাশের রাস্তা সরু রাস্তার পাশে মাটি না থাকায় গাড়িগুলো রাস্তা দখল করে থাকে। ফতেপুর বেইলি সেতু দিয়ে প্রতিদিন বাঞ্ছারামপুর, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, নবীনগর, হোমনা কসবা উপজেলার হাজারো মানুষ কড়িকান্দির মেঘনা নদীর ফেরি দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে থাকেন।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মাসুদ মিয়া বলেন, ‘এই রুটে যখন যাত্রী নিয়ে আসি তখন আতঙ্কে থাকি কতক্ষণ যেন অপেক্ষা করতে হয় সেতু পার হতে। প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে অথচ রাস্তা প্রশস্ত করলে সমস্যা থেকে আমরা কিছুটা হলেও মুক্তি পেতাম।

ট্রাকচালক সোলেমান মিয়া জানান, এই সেতু পার হওয়ার সময় প্রায়ই যানজটে পড়তে হয়। বিশেষ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে এই যানজট বেশি লাগে। দুই পাশের রাস্তা সরু হওয়ার কারণে গাড়িগুলো ঠিকভাবে রাখা যায় না। তার ওপর অটোরিকশার চালকরা আগে যাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করেন। এসব কারণেই প্রতিদিন যানজট তৈরি হয়?

ছয়ফুল্লাকান্দি বাজারের ব্যবসায়ী আল আমিন মিয়া বলেন, ‘ফতেপুর বেইলি সেতুটা আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য একটা দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মালপত্র আনা-নেওয়ার সময় প্রায়ই ট্রাক আটকে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কারণে ট্রাকচালকরা আসতে চান না। এলেও অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন। এখানে যদি ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে হয়তো যানজট থাকবে না।

ফরদাবাদ গ্রামের স্কুলশিক্ষক রুহুল আমিনের ভাষ্য, কোনো কাজে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে যাওয়ার সময় প্রায়ই ফতেপুর বেইলি সেতুতে যানজটে পড়তে হয়। সেতুটি রাস্তার প্রস্থ কম হওয়ায় এই যানজট লেগে থাকছে।

সড়ক জনপদের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তার পরও সেতুর দুইপাশে ইট দিয়ে এসবিবি করে দেওয়ার চেষ্টা করব বরাদ্দ পেলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা জানান, থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে পুলিশের ব্যবস্থা অথবা গ্রাম পুলিশ দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে ঈদ উপলক্ষে মানুষ নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারে এই সেতু দিয়ে।

 

 

কাজী খলিলুর রহমান/মেহেদী হাসান

×