ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

বোয়ালমারীতে ৪ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কাটাগরের মেলা বন্ধ, ফিরে যাচ্ছে দোকানিরা

নিজস্ব সংবাদদাতা,বোয়ালমারী,ফরিদপুর।।

প্রকাশিত: ১৯:১৪, ২০ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৫, ২০ মার্চ ২০২৫

বোয়ালমারীতে ৪ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কাটাগরের মেলা বন্ধ, ফিরে যাচ্ছে দোকানিরা

ছবি: সংগৃহীত

বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় দেওয়ান শাগের শাহ মাঝারে গত ৪ শত বছর ধরে ঘোড়া দৌড়সহ ঐতিহ্যবাহী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে এ বছর আর মেলা অনুষ্ঠিত হবে না বলে জানাগেছে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ দিন ধরে চলে এ মেলা। নাড়ির টানে এ প্রাণের মেলায় আশপাশের ইউনিয়ন ও গ্রাম, দূর দুরান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসে। মেলাটি প্রতিবছরের ১২ চৈত্র অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা। এক সপ্তাহ আগে থেকে বিভিন্ন রকম দোকান আসতে শুরু করে। মেলার প্রধান আকর্ষণ সাজ-বাতাসা, রসগোল্লাসহ হরেক রকমের মিষ্টি। কসমেটিক, খেলনা, খাট-ফার্নিচার সহ কয়েক হাজার দোকান বসে। মেলায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, এ বছর স্থানীয়দের অন্ত কোন্দলের কারণে মেলা আয়োজকদের দুই কমিটি বিভক্ত হয়ে পড়ে। দুইটি কমিটিই মেলার অনুমোদন চেয়ে প্রশাসনের নিকট আবেদন করেন। এই দুইটি কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষই মামলা করেন। যার কারনে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রশাসন অনুমতি দেননি। যে সকল দোকান পাট আসছে স্থানীয়দের কথা-বার্তা শুনে তারা চলে যাচ্ছেন।

এক পক্ষের মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজাদ মোল্যা বলেন, গত ৪ শত বছর যাবত কাটাগড় ঐতিহ্যবাহী মেলা মিলে আসছে। এ বছর স্থানীয়দের মধ্যে অন্ত কোন্দলের কারণে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই গ্রুপ মেলার কমিটি বানিয়ে অনুমতির জন্য প্রশাসনের নিকট আবেদন করেন। মেলা কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপে মারামারিও হয়। মারামারির ঘটনায় মামলাও হয়। অনেকেই জেলে আছে আবার অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। প্রশাসন জানিয়েছিলেন যদি আপনারা দুই গ্রুপ মিলেমিশে মেলা মিলাতে পারেন তাহলে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, দুই গ্রুপ এক হওয়ার কোন সুযোগ নেই তাই এ বছর মেলা বন্ধ থাকবে। যে সকল দোকানপাট আসছে তারা এমনিতেই চলে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব কিছু জানানো হয়েছে। অনুমতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই দেখবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, দুইটি কমিটি  অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাদেরকে বলা হয়েছে দুই গ্রুপ যদি এক হতে পারেন তাহলে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তারা দুই গ্রুপ এক হতে পারবেন না বিধায় মেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওই এলাকায় মেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই গ্রুপেরই মামলা হয়। এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মেলা বন্ধ করা ছাড়া উপায় নেই। তবে ওরশ শরীফ করতে কোন বাধা নেই।

 

এন কে বি নয়ন/মেহেদী হাসান

×