
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।
বুধবার (২০ মার্চ) স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা যেকোনো দেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা অসহিষ্ণুতা মেনে নিতে পারি না এবং বাংলাদেশে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা আমরা স্বাগত জানাই। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি এবং আশা করছি যে, এটি অব্যাহত থাকবে।’
এটি এমন এক সময়ে বলা হলো— যখন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড সম্প্রতি ভারত সফরের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।
গ্যাবার্ড ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের হুমকি ‘ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার আদর্শ’ থেকে উদ্ভূত। তার এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বাংলাদেশ সরকার।
মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান আরও জানান, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে উদ্বেগ এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।’ গ্যাবার্ডের এই বক্তব্য বাংলাদেশের সরকারের কাছে অবিবেচনাপ্রসূত এবং বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
বাংলাদেশ সরকার এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এটি ‘ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য পুরো জাতিকে একপক্ষীয় ও অন্যায্যভাবে চিত্রিত করছে।’ তারা আরও উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলামের চর্চা করে এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের সরকার বিবৃতিতে আরও জানায়, ‘বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে, সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক সংস্কার এবং অন্যান্য সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি।’
এদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে, সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ঘটনা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্তিশালী ভূমিকা বাড়ানো হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এই প্রশংসা এসেছে।
সজিব