
এক টকশোতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ মন্তব্য করেছেন, "ভাবখানা এমন যে বাংলাদেশে কোনদিন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ধর্ষণ হয়নি ১৬ বছরে। সাডেনলি, এই ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশের সব মেয়েরা এবং শিশুরা অনিরাপদ হয়ে গেছে।"
তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে গত ছয় দিনে যে প্রতিবাদগুলো দেখা যাচ্ছে, তা আসলে "টিপিক্যাল প্রতিবাদ নয়"। তিনি উল্লেখ করেন, কিছু গণমাধ্যমে এই প্রতিবাদকে প্রধান পৃষ্ঠায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, “ভাবখানা এমন যে, বাংলাদেশে কখনো আওয়ামী লীগের আমলে ধর্ষণ হয়নি, এখন সব মেয়েরা নিরাপত্তাহীন হয়ে গেছে।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, "যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা দেখিয়ে দেয়, এর পরেই সড়ক আন্দোলন বা মব জাস্টিস হতে থাকে, এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যে সুইজারল্যান্ড ছিল, এখন উগান্ডা হয়ে গেছে—এটা এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।”
তার মতে, এই প্রতিবাদগুলোকে বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজন, তবে তা সঠিকভাবে যাচাই করা উচিত যে, "কোনটা প্রতিবাদ এবং কোনটা আসলে স্যাবোটাজ?" তিনি আরও বলেন, এই সময়টি “সেক্রেটারি জেনারেল জাতিসংঘে আসছে”—এমন সময় "গণজাগরণ মন্ত্র" আবার কর্মসূচি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে শাপলা চত্বরে যে দুইধরনের বিপরীত রাজনীতি রয়েছে—“জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ” এবং “ভারত বিদ্বেষী রাজনীতি”—এগুলো আরও উস্কে দেওয়া হচ্ছে।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, “শাপলা ও শাহবাগের রাজনীতি কি আবার ফিরে আসছে? বাংলাদেশের সরকারকে, বিশেষ করে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে, এই ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে।”
এছাড়া, তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে আক্রমণের বিষয়েও মন্তব্য করেন, “বিরোধীদের প্রতিবাদে পুলিশের ওপর আক্রমণকারীরা, যেভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের মারধর করছে, সেটা সঠিক নয়। এমন আচরণ একটি সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য।” তিনি বলেন, “গণজাগরণ মঞ্চের মতো ফ্যাসিবাদী আন্দোলনগুলো এই ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, “এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, রাষ্ট্রকে এই প্রতিবাদগুলো সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে, এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বও আছে জনগণের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে।” তিনি জানান, “গণজাগরণ আন্দোলনকে মোকাবেলা করার জন্য মিছিল ও প্রতিবাদকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত, কারণ দেশের সব জায়গায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে।”
এবং আরও বলেন, “বিচারের পথ তৈরি করার জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি যথাযথ। দ্রুত বিচারও একটি মৌলিক অধিকার, তবে সেই বিচার অবশ্যই ইনসাফের শর্তে হতে হবে, তা না হলে মিসকারেজ অফ জাস্টিস হতে পারে।”
এছাড়া, "প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার প্রশ্ন উঠছে, কিন্তু বাংলাদেশে কি শারিয়া কোর্ট আছে, যেখানে এমন বিচার হবে?" এমন পরিস্থিতিতে তিনি আরো যোগ করেন, “প্রকাশ্যে বিচারের মাধ্যমে যেহেতু আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ডে বিচার হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।”
তিনি আরও জানান, “জাতিসংঘের রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যে কোনো রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধতা, বা আসামিদের বিচার—এটা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হওয়া উচিত।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ শেষে বলেন, “প্রতিবাদী জনগণের এই দাবির মধ্যে একটি স্যাবোটাজ রয়েছে এবং রাষ্ট্রকে এর মাধ্যমে, অযাচিত বিচার থেকে রক্ষা করতে হবে। বিচারের প্রতিটি গ্রামার অনুযায়ী, রাষ্ট্রের নিজস্ব সময়সূচি মেনে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।”
সূত্র:https://tinyurl.com/2rymuzrk
আফরোজা