ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশ নিয়ে তুলসি গ্যাবার্ডের মন্তব্য, কী বলছেন বিশ্লেষকরা?

প্রকাশিত: ১৯:০৯, ১৯ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ নিয়ে তুলসি গ্যাবার্ডের মন্তব্য, কী বলছেন বিশ্লেষকরা?

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। ভারতে বসে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক অবস্থানের প্রতিফলন, নাকি ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ?

বিশ্লেষকদের মতে, গ্যাবার্ড অসম্পূর্ণ তথ্যের ভিত্তিতে মন্তব্য করেছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বলেন, “তুলসি গ্যাবার্ড সম্ভবত বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত নন, তাই তার বক্তব্যও একপেশে মনে হচ্ছে। তবে যেহেতু তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন, তার বক্তব্যকে একেবারে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।”

বাংলাদেশ সরকারও ইতোমধ্যে তার বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তার মতে, সরকারের পক্ষ থেকে আরও সুস্পষ্টভাবে বাস্তব চিত্র তুলে ধরলে গ্যাবার্ডের অবস্থান পরিবর্তন হতে পারে।

তিনি বলেন, “গত এক দশকে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্য সেই বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এটি জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে।”

সাবেক এই রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “একটি মন্তব্য কোনো দেশের নীতি হয়ে যায় না। এটি হতে পারে ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি বা নির্দিষ্ট এক অবস্থান। কাজেই এটি যে বাস্তবসম্মত ও নিরপেক্ষ নয়, তা যুক্তি ও প্রমাণের মাধ্যমে তুলে ধরা জরুরি।”

এদিকে, বাংলাদেশ ও ভারতের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দুই দেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ এবং কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ভারতের কিছু হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশেও ভারতবিরোধী প্রচারণা শুরু হয়েছে।

পররাষ্ট্র বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এই পরিস্থিতির প্রতি বিশেষ নজর দিচ্ছে এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ বাড়তে পারে। তবে তারা মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারকে দৃশ্যতভাবে দেখাতে হবে যে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কী ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তারা কোনো ধরনের ভয়ভীতির মধ্যে নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারকে কূটনৈতিকভাবে আরও সক্রিয় হতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মহলে দেশের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরতে হবে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/qB6LhsFzLzM?si=UbF4PN0HbRQ_EYC9

এম.কে.

×