ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের ৯ সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৭:০২, ১৮ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৭:০৬, ১৮ মার্চ ২০২৫

ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের ৯ সুপারিশ

সংবাদ সম্মেলন, ছবি: জনকণ্ঠ

ঈদের মতো বড় উৎসবের ছুটিতে দেশে রোডক্র্যাশে হতাহতের ঘটনা বেড়ে যায়। কিন্তু কেন থামানো যাচ্ছেনা রোডক্র্যাশ? কারণ রোডক্র্যাশ প্রতিরোধে এবং সড়কে সকলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন একটি উপযুক্ত আইন, যা বাংলাদেশে নেই। তাই একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন এবং এর যথাযথ প্রয়োগ অতিব জরুরী।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরে সভাকক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিংয়ের আয়োজনে ঈদযাত্রায় রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের সুপারিশ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ইয়ুথ ফোরামের সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা। এসময় তিনি ঈদযাত্রাসহ সকল সময়ে রোডক্র্যাশ কমাতে তরুণদের ৯  সুপারিশ তুলে ধরেন।

সুপারিশগুলো হলো:

১. দেখা যায় বেশিরভাগ রোডক্রাশ সংঘটিত হয় গতির কারণে। তাই দেশের সড়ক ও যানবাহনের পরিস্থিতির কথা ভেবে নিরাপদ গতি নির্ধারণ করা উচিৎ এবং এই সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন অতিসতত্বর প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি ঈদে মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা মেনে চলতে সকলকে বাধ্য করতে হবে।

২. মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়েরই ঈদে চলাচলে মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এবং অতিদ্রুত এ সংক্রান্ত এনফোর্সমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে।

৩. সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।

৪. চালকদের কর্মঘন্টা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। যাতে ঈদযাত্রায় চালকরা পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়। কারণ ক্লান্ত চালক যেমন নিজের জীবনের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি যাত্রীদের জন্যও বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

৫. ঈদযাত্রায় গুরুত্বপুর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে নছিমন, করিমন, টেম্পুসহ সকল প্রকার ব্যাটারীচলিত যানবাহন ও ভটভটি চলাচল বন্ধ করতে হবে।

৬. মদ বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে যাতে গাড়ি না চালায় সেদিকে কঠোর নজরদারী রাখতে হবে এবং এ  সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।

৭. ঈদযাত্রায় যানবাহনে চালকসহ সকল যাত্রীর সিটবেল্ট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং অতিদ্রুত এ সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

৮. পরিবহনের পাশাপাশি পথচারী পারাপার ও তাদের নিরাপদে চলাচলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমন-ফুটপাত হকারমুক্ত করতে হবে। ফুটওভারব্রীজ পথচারীবান্ধব করতে হবে। এবং ফুটপাত ও ফুটওভারব্রীজ ব্যবহারে পথচারীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাড়াও পারাপারের সময় মুঠোফোন ব্যবহার না করা, জেব্রাক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে পথচারীদের সচেতন করতে হবে এবং

৯. সর্বোপরি, বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আদলে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ- বিআরটিএ’র তথ্যমতে গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের রোডক্র্যাশে ১৭ দিনে সারা দেশে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত এবং ৪৬২ জন আহত হয়। তাই ঈদযাত্রাসহ দেশে রোডক্র্যাশের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়, সেই লক্ষে ইয়ুথ ফোরামের পক্ষ থেকে মারজানা মুনতাহা, বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটির জাকিয়া মাইশা ও নিশাত তারান্নুম, এ.এফ.এম সাদমান সাকিব, বাংলাদেশ ডিবেড ফেডারেশনের ইশতিয়াক ইমন, মিশন গ্রীন বাংলাদেশের আহ্সান রনিসহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধ শতাধীক তরুন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রোড সেফটি বিষয়ে মরক্কোর মারাকাসে অনুষ্ঠিত ৪র্থ গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে ২০২৭ সালের মধ্যে সেইফ সিস্টেম এ্যাপ্রোচের আদলে বাংলাদেশে একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

ফজলু/শহীদ

সম্পর্কিত বিষয়:

×