
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন। এই সফর বাংলাদেশের চীন-সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে, কারণ এতে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতার সুযোগ তৈরি হবে। প্রধান উপদেষ্টা শীঘ্রই চীনের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা করবেন এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান,"স্যার চাচ্ছেন যে চায়নার সাথে আমাদের একটা হেলথকেয়ার হেলথ সার্ভিসের এক ধরনের যোগাযোগ আরো বৃদ্ধি করা হোক। যত ধরনের কোলাবরেশন করা যায়, যাতে তারা বাংলাদেশে এসে এই বিজনেস অপরচুনিটি গুলো এক্সপ্লোর করে এবং বাংলাদেশের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারে হসপিটাল নির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়। চাইনিজ কোম্পানিগুলো যাতে বাংলাদেশে ব্যবসা স্থাপন করে, সেই লক্ষ্যে আলোচনা হবে।"
চীন সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার পিকিং ইউনিভার্সিটিতে একটি বক্তৃতা প্রদান। পিকিং ইউনিভার্সিটি, যা চীনের অন্যতম সম্মানিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেখানে তিনি বাংলাদেশের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে একটি মূল্যবান বক্তৃতা প্রদান করবেন। পিকিং ইউনিভার্সিটি চীনেই নয়, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত এবং প্রায়ই বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দশে স্থান পায়।
প্রেস সচিব আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে হাইটেক পার্ক পরিদর্শন করবেন, যেখানে চীন বিশ্বের শীর্ষস্থানে রয়েছে সোলার প্যানেল উৎপাদন এবং চিপ প্রযুক্তিতে। এখানে চীনের বর্তমান প্রযুক্তি খাতের সাফল্য এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
শফিকুল আলম বলেন,"চাইনিজ ফ্যাক্টরিগুলোকে বাংলাদেশে রিলোকেট করা এবং বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত করার জন্য চীনের সঙ্গে একটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। চাইনিজ কোম্পানিগুলো বিশ্বের গ্লোবাল লিডার, তাদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো হবে।"
চীনের অ্যাম্বাসেডর এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,"এটি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফর, যা বিগত ৫০ বছরে কখনোই দেখা যায়নি। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।"
এছাড়া, চীনের সোলার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের সোলার খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশের সোলার ইন্ডাস্ট্রি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং অনেক নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই লঙ্গি, যা বিশ্বের বৃহত্তম সোলার প্যানেল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, তারা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।
লঙ্গি, যা বিশ্বের সোলার প্যানেল উৎপাদনের ৭০% এর বেশি তৈরি করে, বাংলাদেশে তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন করবে, যা দেশের সোলার সেক্টরে বিপ্লব আনতে সহায়ক হবে।
প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চান। তাঁর সফরের পুরো চারদিনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক এবং আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার সফরের লক্ষ্য বাংলাদেশের চাইনিজ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং বাংলাদেশের সোলার ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে নতুন সুযোগ তৈরি করা।
প্রেস সচিব আরো জানিয়েছেন,"এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের চীন সঙ্গে সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে, যা দেশের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"
অতএব, ২৬ মার্চের এই সফরটি বাংলাদেশের চীন-সম্পর্কের জন্য একটি মাইলফলক হতে যাচ্ছে এবং এটি ভবিষ্যতে আরও অনেক চাইনিজ কোম্পানির বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে।
সূত্র:সূত্র:https://tinyurl.com/5em5kywd
আফরোজা