ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

৫৪ বছর কেটে গেলেও, যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম তা পূরণ হয়নি: জামায়াত আমির

প্রকাশিত: ০০:০১, ১৬ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০০:০১, ১৬ মার্চ ২০২৫

৫৪ বছর কেটে গেলেও, যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম তা পূরণ হয়নি: জামায়াত আমির

স্বাধীনতার ৫৪ বছর কেটে গেলেও, যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম তা আজও পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার (১৫ মার্চ) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক ইফতার মাহফিলে জামায়াত আমির এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর কেটে গিয়েছে, বহুবার ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম তা আজও পূরণ হয়নি। কেন তা পূরণ হয়নি তা বিশ্লেষণের অবকাশ নেই। আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি মিলাতে পারছি না। যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে, তারাই নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে অস্থিরতা চলে আসছে। জুলুম নির্যাতন কখনই বন্ধ হয়নি। জাতি অন্ধকার থেকে মুক্তি পায়নি।

জামায়াত আমির বলেন, মাগুরার ৮ বছরের একটি অবুঝ শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জা ও বেদনার। আমরা তার জানমাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। রাষ্ট্র যদি মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারে তাহলেই মানুষ প্রকৃত মানুষ হতে পারে। আমাদের দেশে শিক্ষিত লোকের অভাব নেই। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার অভাব রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষার অভাবে মানুষ সত্যিকার মানুষ হতে পারছে না। দোয়া করি এ জাতিকে যেন আমরা প্রকৃত নৈতিক শিক্ষা দিতে পারি। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরদণ্ড যদি শক্ত না হয়, তাহলে সেই জাতি কীভাবে শক্ত হবে। এই জন্য জাতিকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। তা হলেই জাতি শক্তিশালী হবে। 

তিনি আরও বলেন, জামায়াতের শীর্ষ ৫ জন নেতাকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করা হয়েছে। আরও ৬ জন নেতাকে কারাগারে বন্দি রেখে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করতে বাধ্য করেছে। 

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে জাতি মুক্তি পেয়েছে। জেলখানা থেকে অনেকেই মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রিয় নেতা আজহার ভাই মিথ্যা মামলায় এখনো জেলখানায় অমানবিক যন্ত্রণা ভোগ করছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়া হোক। আর যেন আইনের মারপ্যাচে তাকে বন্দি করে রাখা না হয়। আমাদের আজহারুল ইসলাম ভাইকে অবিলম্বে আমাদের মাঝে যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়, এই কামনা করি। 

বিগত জালেম সরকার অনেকের হাত, পা ভেঙে দিয়েছে। চোখ তুলে ফেলেছে। বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি গুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আওয়ামী জাহিলিয়াত আর যেন দেশে ফিরে না আসে।

জামায়াত আমির বলেন, আমি সম্মানের সাথে স্মরণ করছি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন ও আহত হয়েছেন তাদেরকে। মহান রাব্বুল আলামীন নিহতদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা দান করুন। 

এতে বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় নাগরিক পার্টি, এনডিএম, ১২ দলীয় জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এদিন ইফতার পূর্ববর্তী সময়ে মিলনমেলায় পরিণত হয় চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র।

এ ইফতার মাহফিলে জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি জনাব হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এ্যাডভোকেট মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল ও এডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়ার বিভাগের সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ প্রমুখ। 

শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আলী হোসেন এবং জামায়াত-শিবিরের শহীদ ও মাজলুম নেতাদের পরিবারের সদস্যগণ এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের বেশ কয়েকটি শহীদ পরিবারের সদস্যগণ ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছেন।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ ইফতার মাহফিল সঞ্চালনা করেন।

রিফাত

আরো পড়ুন  

×