
এবার এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন খালেদ মুহিউদ্দীন।লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে রোজা না রাখায় খাবার হোটেল থেকে বের করে এক বৃদ্ধসহ তিন ব্যক্তিকে রাস্তায় প্রকাশ্যে কান ধরিয়ে উঠবস করানোর ঘটনা নিয়ে ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রশ্নে খালেদ মুহিউদ্দীনের লাইভ টক শো ঠিকানা অনুষ্ঠানে প্রশ্নের সম্মুখীন হন সামান্তা শারমিন।
খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চান, “এটার ব্যাপারে এনসিপির কি সিদ্ধান্ত? এনসিপি রেস্টুরেন্ট খোলা রাখা, বন্ধ রাখা, এই ধরনের কাজ করানোর জন্য কান ধরিয়ে উঠবস করানো সাপোর্ট করে কিনা?”
সামান্তা শারমিন জিজ্ঞেস করেন ব্যক্তি স্বাধীনতার মাত্রা কতটুকু?
অনুষ্ঠান উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন,“ব্যক্তি স্বাধীনতার কোন মাত্রা নাই। ব্যক্তি ব্যক্তির স্বাধীনতা দিয়ে বুঝবে একটা ক্রাইম করা পর্যন্ত। আপনার জন্য সিআরপিসি আছে। পেনাল কোড আছে। এর বাইরে যদি সে কোন কিছু করে, সেটা আইনভাবে ব্যবস্থা নিবে।”
খালেদ মুহিউদ্দীন আরও জানান,“আমি নিজে নিজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে খেতে পারবো, এটা আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা। রমজান মাসেও।”
সামান্তা ব্যক্তি স্বাধীনতার প্যারামিটার জানতে চাইলে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন,“ব্যক্তি স্বাধীনতার কোন সীমাবদ্ধতা নাই। ব্যক্তির স্বাধীনতার সীমা হচ্ছে একটা ক্রাইম করা পর্যন্ত। আমাদের খাতা কলমে যেটাকে ক্রাইম হিসেবে গণ্য করা আছে। যেমন ধরেন, আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা নাই আপনাকে একটা টোকা দেওয়ার জন্য। এই টোকাটা একটা ক্রাইম, আমি আর এটা ব্যক্তি স্বাধীনতার মধ্যে পড়ি না। আমি আপনাকে টোকা দিতে পারবো না। কিন্তু আমি নিজে নিজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাইতে পারবো। এটা আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা। রমজান মাস হলেও।”
সামান্তা বলেন,“যখন একজন লোক হাতে একটা বেত নিয়ে একজন লোককে কান ধরে উঠবস করায় তার পাওয়ার শো করে, এর কোন সমতা নাই, এর কোন আর্গুমেন্ট নাই, এটা কোন আলোচনা না।তিনি আরও বলেন,“এটা হচ্ছে একজন লোক তার পাওয়ার শো করে আরেকজন লোককে ডমিনেট করছে। তার মানে এটা পরিষ্কারভাবে এটা অন্যায়। এটা করা ঠিক হয় নাই।”
খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চান,“এটার ব্যাপারে এনসিপির কি সিদ্ধান্ত?”
সামান্তা বলেন,“এইখানে একটা লোক বারবার তাকে ডমিনেট করার চেষ্টা করছে। ক্লিয়ার ডমিনেশন। যেটা কোনভাবে সমতা নাই। একটা লোক সে একটা পরিষ্কার সুন্দর জামা কাপড় পরা পাঞ্জাবি পরা এবং সে হচ্ছে লাঠি দিয়ে একজনকে বলতেছে তার যে সামাজিক হায়ার অবস্থান সেটা সে মিস ইউজ করে, আরেকটা সামাজিকভাবে লোয়ার অবস্থানে থাকা খেটে খাওয়া মানুষকে। তার জীবনের গল্প তো কেউ জানে না।”
খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন,“সেই প্রেক্ষিতে আমি জানতে চাইছিলাম যে, এনসিপি রেস্টুরেন্ট খোলা রাখা বন্ধ রাখা, কেউ এই ধরনের কাজ করানোর জন্য এটা সাপোর্ট করে কিনা?”
দুইটা সেপারেট জিনিস, এনসিপি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দল না উল্লেখ করে সামান্তা বলেন,“এনসিপি কি মনে করে একদম প্রত্যেকটা ধর্মের প্রত্যেকটা বিষয়ে তারা ফতোয়া ফতোয়া দিবে?”
রমজানের দোকান খোলা থাকবে কি থাকবে না খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চাইলে সামান্তা স্পষ্ট উত্তর না দিয়ে বলেন,“এনসিপির কাছে যদি জনগণ সকলে মিলে বলে এনসিপি এখানে এটা সলভ করতে হবে, কিন্তু তা তো না। একেকটা পলিটিক্যাল পার্টি একেকটা জনগোষ্ঠী। তাহলে এই যে এতগুলো মানুষের দায়িত্ব তো আমরা যদি নিতে চাই, তাহলে আমাদেরকে তো ফরমালি দিতে হবে। তাহলে আমরা সকলকে মিলে এটা একটা বোর্ড গঠন করে আমরা এই সমাধানগুলো দিয়ে দিই। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামো আছে। আমাদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাই। এই সমস্যাগুলো সমাধান করা কি ইসলামী ফাউন্ডেশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না? তাহলে আমরা যে ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলো চালাই, তাহলে আমরা কেন ট্যাক্সের টাকাটা নষ্ট করি?আমি আর কিছু বলতে চাই না।”
আফরোজা