ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

জামায়াত আমির

দেশে কুরআনী অনুশাসন না থাকায় আছিয়াদের জীবন দিতে হচ্ছে

প্রকাশিত: ১৯:৫৬, ১৩ মার্চ ২০২৫

দেশে কুরআনী অনুশাসন না থাকায় আছিয়াদের জীবন দিতে হচ্ছে

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে জামায়াতের ইফতার মাহফিলে জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে কুরআনী অনুশাসন নেই বলেই আছিয়াদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও জীবন দিতে হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে স্থানীয় সুধীদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, কুরআন-সুন্নাহর আদর্শের ভিত্তিতে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসনমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামী জনগণের কাছে কৃত অঙ্গীকার পালনে আপোষহীন।  

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, রমযান মাস এমন এক মহিমান্বিত মাস, যে মাসের প্রথম দশকে রহমত, মধ্য দশকে মাগফিরাত এবং শেষ দশকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এ মোবারক মাসেই বদর যুদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পেয়েছিলো। মক্কা বিজয়ও হয়েছে এ মাসেই। এরপর বড় বড় বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম বিশ্বের অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই বিশ্ব  মানবতার মুক্তির জন্য ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে কুরআনের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কুরআন দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন, ধর্ষণ অপহরণ কোন কিছুই থাকবে। যাকাত ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত দেশ দারিদ্রমুক্ত হবে। কোন যুবক বেকার বা কর্মহীন থাকবে না। থাকবে না মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ বা বৈষম্য। তিনি দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তি কল্যাণ রাষ্ট্রের পরিণত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান। তাহলে দেশকে একটি শান্তির নীরে পরিণত করা সম্ভব।

তিনি বলেন, মূলত, মানবরচিত মতবাদ দিয়ে দেশ শাসিত কারণে আমাদের সমাজ রাষ্ট্রে এতো অশান্তি। ফলে দেশ এখন অপরাধ ও অপরাধীদের রীতিমত অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এমন এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। দেশে কোন দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ছিনতাই, অপহরণ ও ধর্ষণ সহ কোন অপরাধ থাকবে না। রাষ্ট্রই সকল নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ সকল মৌলিক ও মানবীয় অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এমন একটি শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের সকল ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী কুরআনের আলোকে আলোকিত এক নতুন বাংলাদেশ গড়তে দেশ ও জাতির কাছে প্রতিশ্রতিবদ্ধ।

তিনি মাগুরার আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশে কুরআনী অনুশাসন নেই বলেই আছিয়াদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও জীবন দিতে হচ্ছে। তিনি ভিকটিম আছিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তাকে জান্নাতের আ’লা মাকাম দানের জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবার দোয়া করেন। আমীরে জামায়ত মরহুমা আছিয়ার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং সবরে জামিল ধারণের তাওফিক কামনা করেন। তিনি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও জোর দাবি করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে মাহে রমযানের নিয়ামত দান করেছেন যাতে আমরা তাকওয়া অর্জন করে নিজেদের পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে পারি। মূলত, সিয়াম আমাদেরকে সভ্য, সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে। তাই মাহে রমযানের শিক্ষা জীবনের সকল ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যে তাক্বওয়ার গুণাবলী সৃষ্টি করতে হবে।

সায়মা ইসলাম

×