
বিএনপি কেন নির্বাচন চাচ্ছে এই নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে কথা বলেছেন রুমিন ফারহানা।
উপস্থাপকের প্রশ্ন ছিল, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বিভিন্ন অরাজকতা কি নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয়, নাকি এই অস্থিতিশীল অবস্থা থাকলে সরকার চাইলেও নির্বাচন করা কঠিন?
রুমিন ফারহানা বলেন, এই সরকার আছে ৭ মাস হলো, এখনো কেন আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যায়নি। চুরি, ছিনতাই, খুন, দখলবাজি হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন ভূমিকা পালন করতে পারছে না এখানে। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা এই এলাকাগুলো অপরাধপ্রবণ এলাকা, এই জায়গাগুলো মানুষ এখন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। কয়দিন আগে টাঙ্গাইলে একজন সাবেক এমপির বাড়ি পাগল দিয়ে ভরে ফেললো, আমার কাছে মনে হয় রাষ্ট্রের ট্যাসিট মদদ না থাকলে এগুলো সম্ভব হয় না।
রুমিন বলেন, এই পরিস্থিতি কিন্ত একদিনে এখানে আসেনি, ধীরে ধীরে এসেছে। হিজবুত তাহরীর ঘোষণা দিয়ে মিছিল করছে। আর এইসব পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দিনশেষে নারীরাই বেশি ভুক্তভোগী হন। কয়দিন আগে আমরা সিগারেটের ঘটনা দেখলাম এবং তারপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হাসি হাসি মুখে কী যেন বললো এসে। উনি যা বলেছেন নিজেও জানেন এক অর্থে তিনি অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। কারণ উনি খুব ভালো করে জানেন, ওখানে ১০টা ছেলে দাঁড়িয়ে সিগারেট খেলে এই ঘটনা ঘটতো না। অথচ বিষয়টি উনি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেন, এতে করে পাড়ার আরো ১০০টা ছেলেকে উৎসাহিত করবে এইসব ঘটনা ঘটাতে।
বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোন মন্ত্রী বা এমপি রাত ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে নাই, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা করেছে। কখন করেছে, যখন অক্সিলারি ফোর্স হিসেবে আর্মিকে মাঠে রাখা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে। আমাদের পুলিশ কমিশনার বলছে, এই ঈদে যার যার নিরাপদ তার নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে তিনি বেতন নিয়ে ওখানে আছে কেন।
এরপর উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, নির্বাচন হলে কি এগুলো সব ঠিক হয়ে যাবে?
রুমিন ফারহানা বলেন, নির্বাচন হলে একটা চেইন অব কমাণ্ড আসবে। আপনি যদি ৫২ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের আন্দোলনের ইতিহাস দেখেন, প্রতিটি আন্দোলনে সামনে নারীরা, তারপরে স্টুডেন্টরা৷ সেই সব আন্দোলনের পরে কি একবারও স্টুডেন্টরা ক্ষমতা দাবি করেছে বা ইচ্ছাপোষণ করেছে বা ওখান থেকে একটা দল গঠন করেছে? করে নাই। ২৪ এ এসে করেছে, কোন অসুবিধা নাই, করতে চেয়েছে করেছে। ৬ই আগস্ট থেকে বিএনপি একটা কথাই বলছে, নির্বাচন।
তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, বাংলাদেশে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যদি কেউ যেতে চায় তার নিজের ভিশন যদি কেউ বাস্তবায়ন করতে চায়। একমাত্র উপায় নির্বাচন। এর বাইরে কোন উপায় নাই। বিএনপি কোন আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি না, বিএনপি কোন সশস্ত্র সংগঠন না, বিএনপি এই নির্বাচনের জন্য ১৫ বছর সংগ্রাম করেছে এবং একটি রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচন চাবে এটাই স্বাভাবিক। সেই কারণে বিএনপি নির্বাচন চাচ্ছে।
সরকার যদি জনমনে একটু স্বস্তি দিতে পারত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঠিক থাকত, তাহলে সবাই নির্বাচনের জন্য এত অস্থির হতো না। গণমানুষের দাবি এই নির্বাচন, শুধু বিএনপির দাবি না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় হচ্ছে না, কারণ তারা এখন যদি কোন শক্ত স্টেপ নেয়, পরবর্তীতে কে আসবে না আসবে একটা দোলাচলের ব্যাপার আছে। এই সরকার কতদিন আছে সেটাও তারা জানে না। আমি এমন অনেকজে জানি, যাদের সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও কোন প্রমোশন বা পোস্টিং নিতে চাচ্ছে না। বিএনপি এই সংস্কার এর বিরোধ কখনোই না, কারণ বিএনপির ভিশন ২০৩০ এ এগুলো আগেই দেয়া আছে।
রিফাত