ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

১০ কোটি টাকায় নমিনেশন কিনে এক বছরে ১০০ কোটি টাকার মালিক: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২২:২৬, ১১ মার্চ ২০২৫

১০ কোটি টাকায় নমিনেশন কিনে এক বছরে ১০০ কোটি টাকার মালিক: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

ছবি: সংগৃহীত।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের 'দেশ সাম্প্রতিক' নামক টকশোতে কথা বলেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। অনুষ্ঠানে  রাজনৈতিক দলগুলোর গণতন্ত্রের কথা বলার পরও নারীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সবাই তো ভালো ভালো কথা বলে, কিন্তু যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ।"

তিনি ব্যাখ্যা করেন, রাজনীতি মূলত অর্থনীতির ঘনীভূত প্রকাশ। রাজনীতির শক্তি দুই ধরনের—একটি হলো যারা অর্থনৈতিক স্বার্থে শোষকশ্রেণীর পক্ষে নীতি নির্ধারণ করে, আরেকটি হলো যারা ক্ষমতা ধরে রাখতে রাজনীতিকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেয়।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নির্বাচনের প্রক্রিয়া এমন যে, যেখানে পেশীশক্তি, টাকার প্রভাব, প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ এবং বাহিনীর আধিপত্য যার বেশি, তার বিজয় নিশ্চিত। নমিনেশন পেতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়, যা রাজনীতিকে একটি ব্যবসায়ে পরিণত করেছে। এখানে, ১০ কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে নমিনেশন পেলে এক বছরের মধ্যেই ১০০ কোটি টাকা লাভ করা সম্ভব হয়। ফলে রাজনীতি কলঙ্কিত, দূষিত এবং রুগ্ন হয়ে পড়েছে।

এই সংস্কৃতি যদি রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে, তাহলে কোনো দল ভালো থাকার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয় না। কারণ, নমিনেশন পেতে হলে বিজয়ের সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে হবে। নারীদের জন্য এত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নির্বাচনে জেতা বেশ কঠিন, ব্যতিক্রমী কিছু উদাহরণ ছাড়া।

এ কারণে পার্লামেন্টে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংরক্ষিত আসন ব্যবস্থা চালু করা হয়। শুরুতে ৩০টি আসন এবং পরে তা ৫০-এ উন্নীত করা হয়। তবে এটি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বরং রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়নের ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়।

মূল সমস্যা রাজনৈতিক দলের নীতিতে নিহিত। যদি দলীয় আদর্শ হয় সম্পদ কেন্দ্রীভূত করা কিছু ব্যক্তির হাতে, তাহলে সেটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

তিনি উল্লেখ করেন, এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত সরকারের সময়ে ২৮ লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, যা সরকারি কমিশনের হিসাবেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় ধনী-গরিবের বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে। এই অর্থ বিদেশের বিভিন্ন দেশে, যেমন—ইংল্যান্ড, আমেরিকা, মালয়েশিয়া এবং সুইজারল্যান্ডে বিলাসবহুল বাড়িঘর ও সম্পদ গঠনের পেছনে ব্যয় হয়েছে।

রাজনীতির এই অসংগতি ও দুর্বলতা দূর না হলে, গণতন্ত্রের প্রকৃত চর্চা এবং নারীর অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=Wjle5Sa-FnQ

সায়মা ইসলাম

×