
ছবি: সংগৃহীত
লালমনিরহাটে বহুল আলোচিত হাসিনা বেগম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ঘাতক স্বামী আশরাফুল ইসলামের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত রবিবার দুপুরে লালমনিরহাট শহরের পিংকির মোড়ে এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ি গ্রামের মৃত নওয়াব আলীর ছেলে। মৃত হাসিনা বেগম তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং প্রথম স্ত্রী মেহেরুন বেগমও এ মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম সোমবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, নিহত হাসিনা বেগমকে প্রায় ২০ বছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলাম। পরে সতীনের সংসারে বিবাদ লাগলে তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে। পরে পার্শ্ববর্তী নুর ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসিনা বেগমের।
সেখানে বিচ্ছেদ ঘটলে পুনরায় আশরাফুল হাসিনাকে বিয়ে করেন। হাসিনা বেগমের সংসারে আশরাফুলের দুই মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগমকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করলেও ছয় মাস আগে নিজ এলাকায় বড় স্ত্রীর বাড়ির পাশে পৃথক বাড়ি করে ছোট স্ত্রী হাসিনাকে নিয়ে বসবাস করতেন আশরাফুল ইসলাম। সতীনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় সময় বিবাদ লাগতো তাদের সংসারে। যা নিয়ে অতিষ্ঠ ছিলেন স্বামী আশরাফুল। এরপর বড় স্ত্রীর পরামর্শে গত ৪ মার্চ ছোট স্ত্রী হাসিনাকে ভ্যানে করে বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ান আশরাফুল। বাজার থেকে কিনে নেন হাসুয়া (দেশি ধারালো অস্ত্র)। এরপর সন্ধ্যা হলে পানের সঙ্গে স্ত্রীকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন। একপর্যায়ে রাত হলে সহযোগীদের সহায়তায় বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার ফুলগাছ এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে স্ত্রী হাসিনাকে কোপ দিয়ে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর কাটা মাথা নিয়ে বাড়ি ফিরে বড় স্ত্রীকে দেখান। যা পরদিন বাড়ির পাশে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা একটি তামাক ক্ষেতে পুঁতে রাখেন। ছোট স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বড় স্ত্রীকে খুশি করতে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন স্বামী আশরাফুল।
পুলিশ গত বুধবার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করে নিহত হাসিনার ঘর থেকে আশরাফুলের রক্তাক্ত পোশাক উদ্ধার করে। এরপর গত শুক্রবার হাসিনার সতীন মেহেরুনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ।
আবীর