ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

নেত্রকোনায় সংঘর্ষে নিখোঁজ হওয়া ৩ জনের লাশ উদ্ধার, টানটান উত্তেজনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১০ মার্চ ২০২৫

নেত্রকোনায় সংঘর্ষে নিখোঁজ হওয়া ৩ জনের লাশ উদ্ধার, টানটান উত্তেজনা

ছবি: সংগৃহীত

হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরী উপজেলার রসুলপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে বহিরাগত মাছ শিকারীদের সংঘর্ষের সময় নিখোঁজ হওয়া তিন ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে নাওটানা (আশাখালি ঘাট) এলাকার ধনু নদী থেকে দমকল বাহিনীর ডুবুরিরা লাশ তিনটি উদ্ধার করে। যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হল আটপাড়া উপজেলার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের রুস্তুম আলীর ছেলে শহিদ মিয়া (৪৫), কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (৩২) ও মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে রুকন মিয়া (৪২)। গত শনিবার দুপুর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। মদনের গোবিন্দশ্রী গ্রামের ইয়াসিন মিয়া (২১) এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

জানা গেছে, গত শনিবার বেলা ১২টার দিকে বিভিন্ন উপজেলার সহস্রাধিক সৌখিন মাছ শিকারী সংঘবদ্ধ হয়ে পলো দিয়ে খালিয়াজুরী উপজেলার কয়েকটি জলমহালের মাছ শিকার করতে রসুলপুরে ধনু নদীর ঘাটে যান। এ সময় জলমহালের ইজারাদারদের আর্থিক ক্ষতির কথা ভেবে রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দারা তাদের নৌকায় ধনু নদী পাড়ি দিতে বাধা দেন। এর জেরে রসুলপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে মাছ শিকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় রসুলপুর গ্রামে ও বাজারের দোকানপাটে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর করা হয় মাছ শিকারীদের দূর-দূরান্ত থেকে পরিবহন করে নিয়ে আসা শতাধিক ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরবাইক এবং পিকআপও। বেশকিছু গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়া হয়। সেদিনের সংঘর্ষে দুইপক্ষের অন্তত একশ জন আহত হন। এলোপাথারি সংঘর্ষের সময় প্রাণ বাঁচাতে অনেকে ধনু নদীতে ঝাঁপ দেন। তাদের মধ্যে অন্তত চারজন নিখোঁজ হন। ওই ঘটনার পর স্থানীয়রা ৫১ জন মাছ শিকারীকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেন। পরদিন (রবিবার) খালিয়াজুরী এবং মদন উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সমঝোতায় তাদের মুক্ত করা হয়। 

এদিকে ওইদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাটিতে টানটান উত্তেজনা দেখা দেয়। খালিয়াজুরীর রসুলপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে সোমবার সকাল ৮টায় মদনের গোবিন্দশ্রী বাজারে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রবিবার রাতে মাইকিং করা হয়। পরবর্তীতে আবার ওই এলাকার সাবেক এমপি এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাল্টা মাইকিং করে এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়। মোতায়েন করা হয় ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। ওই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার ধনু নদীতে তিন লাশের সন্ধান মিলে।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান তিনটি লাশ উদ্ধারের কথা স্বীকার করে বলেছেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। পরিস্থিতি শান্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

আবীর

×