ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

গত ১৬ বছরে সেনাবাহিনীকে চরমভাবে ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে: ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির

প্রকাশিত: ০১:১৪, ১০ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০১:৩২, ১০ মার্চ ২০২৫

গত ১৬ বছরে সেনাবাহিনীকে চরমভাবে ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে: ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির

সেনাবাহিনী সম্পর্কিত নানা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে দেশপ্রেম থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, অন্য কোন কিছু আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হতে পারে না। তাঁর মতে, “সশস্ত্র বাহিনীকে প্রকৃত অর্থে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্ষম হতে হবে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে।”


সেনাবাহিনী পুনর্গঠন এবং রাজনীতিকরণের বিপক্ষে বৃহত্তর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির বলেন,“সেনাবাহিনী বলতে আমরা বুঝি সশস্ত্র বাহিনী। সশস্ত্র বাহিনীকে প্রকৃত অর্থে দেশপ্রেম থেকে আমাদেরকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমাদের অন্য কোন কিছু আমাদের প্রাইওরিটি হতে পারে না।” এমন মন্তব্য করেছেন ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির।


তিনি আরো বলেন, “দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী যদি আমরা নাম নেই তাহলে আমাদের অন্য কোন কিছু যাতে আমাদেরকে ডিরেক্ট না করতে পারে, আমাদেরকে আমাদের কার্যপরিধি, কার্যক্রমটাকে বিপথে না নিতে পারে সেভাবে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী।”


এছাড়া, তিনি বলেন, “আমরা দেখলাম যে গত ১৬ বছরে এই বাহিনীটাকে চরম ভাবে ধ্বংস এবং ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এটা একটা সেরিমনিয়াল বাহিনী হিসেবে আমি মনে করি, আমরা এখন ওই পর্যায়ে নিয়ে গেছি।”


ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির জানান, “এই বাহিনীকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবসার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের প্রাইমারি উদ্দেশ্য এখন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একটার পর একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে এই সমস্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া।”


তিনি আরো বলেন, “এটা শুধু ব্যবসায় কার্যক্রমের কারণে সমস্ত বাহিনীটাই কিন্তু একটা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে এবং রাজনীতিকরণের কারণে বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক অপরাধ যেমন হত্যা, গুম, খুন ইত্যাদি কার্যক্রমের সাথে আমরা যুক্ত হয়ে যাচ্ছি।”


ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির বলেন, “এবং যেটা আমাদের বেশি চিন্তিত করছে যে আমরা ন্যায়পরায়ণতার কথা বললেও আজ পর্যন্ত প্রায় আট মাস হতে চলল আমরা এখনো পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে সেনাবাহিনীর যারা দোষী চিহ্নিত হয়েছে ,আমি বলবো না দোষী প্রমাণিত। যাদেরকে সন্দেহ করা হচ্ছে একিউজড এবং বিভিন্ন গুম খুন হত্যার কার্যক্রমের সাথে জড়িত।”


তিনি বলেন, “রাজনীতি ব্যাপকভাবে রাজনীতিকরণের পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর সুনাম, সশস্ত্র বাহিনীর সুনামকে ক্ষুণ্ণ করার কাজে যারা লিপ্ত ছিল তারা হয় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে, রাষ্ট্রীয় বা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় অথবা বাহিনীর নিরাপত্তা হেফাজতে তারা রয়েছে।”


এছাড়া, তিনি আরো জানান, “এমনকি আইসিটির মামলায় যাদের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে তাদেরকে পর্যন্ত আজ পর্যন্ত আমরা আইনের অধীনে হস্তান্তর করতে আমরা দেখছি না। এই বিষয়গুলো আমাদেরকে সত্যিকার অর্থেই চিন্তিত করছে।”


তিনি বলেন, “আরেকটা বিষয় যেটা চিন্তার যে প্রায় সাত আট মাস হয়েছে, গত ১৬ বছরে আমরা বলেছি যে অনেক অফিসারকে সশস্ত্র বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করার একটা পর্যায়ে অনেক সক্ষম অফিসারকে অকারণ এবং অন্যায় ভাবে শাস্তি দিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, বরখাস্ত করা হয়েছে, অবসরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।”


তিনি আরও বলেন, “আজ পর্যন্ত কিন্তু তাদেরকে কোন রকম রিহ্যাবিলিটেশনের কোন কার্যক্রম আমরা দেখছি না। বা তার লক্ষণও যেটা দেখছি। সেটা হাস্যকর মনে হচ্ছে। একটা বোর্ড গঠন হয়েছে যাতে ১৭ থেকে ২০ জন ২৫ জন অফিসার কারা থাকছে। কেন থাকছে উপস্থিত তারা কি এখানে কোন রূপকথার গল্প শুনতে যায় নাকি প্রকৃত অর্থে কোন সমাধান করতে ওখানে বসে এটা স্পষ্ট না।”
তিনি জানান, “অফিসারদেরকে বসিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে তাদের কথা শোনা হয় এবং তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবং কতজন এ পর্যন্ত এই কমিটির অধীনে কি বিচার পেয়েছে বা কি সমাধানের প্রতি কতটা অগ্রসর হয়েছে আমরা কিছুই জানি না। প্রকৃত অর্থে যেটা হচ্ছে এটা প্রতি আমাদের কোন স্বীকৃতি নাই।”


তিনি বলেন, “আমরা মনে করি না যে এটার প্রথমে এটা কোন আমাদের যে সমস্যা সশস্ত্র বাহিনীকে আবারো সক্ষম করে গড়ে তোলা এবং অতীতে যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতির হিসাব নেওয়া। সেটা কোনভাবেই এই বোর্ড বা বাহিনী পর্যায়ের বোর্ডের পক্ষে সম্ভব না।”


“সেজন্যই আমরা বারবার বলে আসছি যে সশস্ত্র বাহিনীকে একটা ব্যাপক সংস্কারের মধ্যে যেতে হবে। সেটা ইনক্লুড করবে আইন-কানুনের সংস্কার এবং সেটা পুনর্গঠন সশস্ত্র বাহিনীকে পুনর্গঠন করতে হবে।”
 

সূত্র:https://www.youtube.com/watch?v=O0TyipQxcEY

আফরোজা

×