ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

জুলাইতে নারী ছিল সামনে, এখন ভিলিফাই করা হচ্ছে: সামান্তা শারমিন

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ৯ মার্চ ২০২৫

জুলাইতে নারী ছিল সামনে, এখন ভিলিফাই করা হচ্ছে: সামান্তা শারমিন

ছবি: সংগৃহীত।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, "জুলাইতে নারী ছিল সামনে, এখন তাদের ভিলিফাই করা হচ্ছে।"

তিনি বলেন, "জুলাই আন্দোলনের মধ্যে নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমত, আওয়ামী লীগের যে ন্যারেটিভ, যার মাধ্যমে তারা তাদের ফ্যাসিস্ট কাঠামো তৈরি করেছে এবং ১৫ বছর ধরে শাসন করছে, সেটি প্রথমেই নারীরাই ভেঙেছে। ১৪ জুলাই, রাজাকারের ন্যারেটিভকে প্রত্যাখ্যান করে মেয়েরা হল থেকে বেরিয়ে আসে। এটি ছিল অভ্যুত্থানের প্রথম স্তর। এরপর আমরা দেখেছি নারীরা সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে এগিয়ে এসেছে। তারা জানত, গুলি নারী-পুরুষ উভয়ের ওপরই চলবে, তবু তারা ভয় না পেয়ে সামনে এগিয়েছে।"

সামান্তা শারমিন আরও বলেন, "নারীদের এই অংশগ্রহণের পেছনে দুইটি কারণ থাকতে পারে। এক, তাদের সহযোদ্ধা পুরুষদের বাঁচানোর আকাঙ্ক্ষা, অথবা দুই, তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক চেতনা। অভ্যুত্থানের সময় নারীরা শুধু লড়াই করেনি, বরং আহতদের চিকিৎসা, শহীদ পরিবারের খোঁজ নেওয়া, তাদের সহযোগিতা করা, এমনকি খাবার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছে। অভ্যুত্থানের প্রতিটি ধাপে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, যা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কিন্তু এখন আমরা দেখছি, সেই নারীদেরই খাটো করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।"

তিনি বলেন, "আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দীর্ঘদিন ধরেই নারীদের ভূমিকা খাটো করার প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু এটি কাটিয়ে ওঠার জন্য নানান ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আমাদের কমিটির কাজের সময় লক্ষ্য করা গেছে, শুরুতে ২৫% নারী সদস্য থাকার ম্যান্ডেট থাকলেও পরে তা ১৫%-এ নেমে এসেছে। এটি আমাদের জন্য বড় একটি ধাক্কা। আমরা এটিকে সংশোধন করে নারী সদস্যদের সংখ্যা ৩০% বা তার বেশি করার জন্য কাজ করছি।"

নারীদের অগ্রগতির জন্য তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে কাউকে পদ দেওয়া হলে, তা টোকেনিজম হয়ে যাবে। এটি দীর্ঘমেয়াদে নারী বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে পারে। তাই, নারীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে রাজনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি।"

তিনি আরও বলেন, "আমাদের তরুণ সহযোদ্ধারা নারীদের জন্য একটি স্বস্তিকর রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে চান। তবে শুধুমাত্র সদিচ্ছা যথেষ্ট নয়, বাস্তবিক পদক্ষেপও নিতে হবে। নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ শুধু সামনে থাকার জন্য নয়, বরং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক পরিবারের বাইরের নারীদের জন্যও সুযোগ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা কোনো বৈষম্য ছাড়াই রাজনীতিতে অংশ নিতে পারে।"

সামান্তা শারমিন বলেন, "নারীদের পেছনে রাখা হলে, ক্ষমতার ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে। তাই, নারীদের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত না করে বরং উৎসাহিত করতে হবে।"

নুসরাত

×