
ছবি: সংগৃহীত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মনিরা শারমিন বলেছেন, নারীরা যখনই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন বা সরব হন, তখনই তারা সাইবার বুলিংসহ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন।
এক আলোচনায় তিনি বলেন, "যদি নারীরা তাদের অধিকার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে না পারেন, তবে তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। নারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সমান সুযোগের পরিবেশ তৈরি না হলে, তারা কখনোই সামনে আসতে পারবে না।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীরা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নারী নেতৃবৃন্দও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। যখন কোনো নারী আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে চলে আসেন, স্পষ্টভাবে কথা বলেন এবং পরিচিতি লাভ করেন, তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার চরিত্র হনন ও অপপ্রচারের শিকার হতে হয়। এই মনস্তাত্ত্বিক প্রবণতা সম্পর্কে আলোচনা হয় না, বরং রাজনৈতিক পরিসর থেকে নারীরা আরও পিছিয়ে পড়েন।"
মনিরা শারমিন ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, "তখনও অনেক নারী একসঙ্গে আন্দোলন শুরু করলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেকেই টিকে থাকতে পারেননি। সামাজিক, পারিবারিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে নারীদের জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। নারীদের জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরি করা হয়নি, ফলে দীর্ঘদিন ধরেই তারা নেতৃত্ব থেকে পিছিয়ে রয়েছেন।"
তিনি আরও বলেন, "গত ১৫-২০ বছরে নারীদের নেতৃত্ব তৈরির তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংরক্ষিত নারী আসন ও টোকেনিজমের রাজনীতি থেকে আমরা এখনও বেরিয়ে আসতে পারিনি। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতিতে নারীরা এখনো নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন। যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে তারা নেতৃত্বে আসতে চাইলে সংকীর্ণ মানসিকতার কারণে তাদের পথ রুদ্ধ করা হয়।"
তিনি মনে করেন, শুধুমাত্র সরকারকে দোষারোপ না করে সামগ্রিকভাবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা জরুরি। নারীদের ক্ষমতায়ন ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সামাজিক আন্দোলনকে আরও জোরালো করা প্রয়োজন।
নুসরাত