
ছবি: সংগৃহীত।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) কার্যক্রম অন্য কোনো দপ্তর বা কর্তৃপক্ষের অধীনে স্থানান্তর করা হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। তাই এই কার্যক্রম নিজেদের অধীনেই রাখার পক্ষে মত দিয়েছে ইসি এবং এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছে।
সূত্র জানায়, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র (ন্যাশনাল আইডেন্টি কার্ড) সেবা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিকট চলমান রাখা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের অভিমত ও সুপারিশ প্রেরণ’ শীর্ষক একটি চিঠি রোববার (৯ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
ইসির ক্ষমতা ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর প্রভাব
চিঠিতে বলা হয়েছে, এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতা থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা কমে যাবে। একই সঙ্গে ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এনআইডি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তাদের ১৭ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়টিও এতে তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া, চিঠির অনুলিপি অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিবের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
ইসির এনআইডি কার্যক্রম: অতীত থেকে বর্তমান
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে, যার ভিত্তিতে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। পরবর্তীতে, ২০১১ সালে ইসি একটি সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলে।
বর্তমানে ইসির সার্ভারে প্রায় ১২.৫ কোটি বাংলাদেশি নাগরিক ও ১১ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য সংরক্ষিত আছে। রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো বিদেশি যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে, সেজন্য ইসি একাধিক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। ফলে ভোটার তালিকা স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তাদের উদ্বেগ ও কর্মসূচি ঘোষণা
বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, এনআইডি নিয়ে বারবার একেক সময় একেক রকম সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি হয়। তারা এনআইডি নিয়ে টানা হেঁচড়া করে। এর আগে একাধিকবার চেষ্টা হয়েছিল, মাঝে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। এখন আবার নতুন কমিশন তৈরি করে তাতে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, কোনো না কোনো উদ্দেশে এগুলো করা হচ্ছে। আমরা অ্যাসোসিয়েশেনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।"
তিনি আরও বলেন, ১৭-১৮ বছর ধরে কোনো সমস্যা হয়নি। আজকে এমন কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি যার কারণে এনআইডি ইসি থেকে অন্য কোথাও যাবে। আমরা কমিশনকে জানিয়েছি, সময় দিয়েছি আগামী বুধবারের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি প্রত্যাশা করছি। তা না হলে ১৩ মার্চ ইসি সচিবালয়সহ সারাদেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১১ থেকে ১টা পর্যন্ত মানবন্ধন করবো। তারপরও দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতিসহ আরো কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।
নুসরাত