
শিশু ধর্ষণ ও শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় পৃথক দুই মামলা গ্রেফতারকৃত দুইজন
গাজীপুরের শ্রীপুরে নারী দিবসে এক শিশুকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ এবং এক কওমী মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়েছে। নির্যাতনের শিকার দুই শিশুর বয়স আট বছর। শনিবার (৮ মার্চ) রাতে শ্রীপুর থানায় ওই দুটি মামলা দায়ের করে ভিকটিমের স্বজনেরা। শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আসামীরা হলো ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের শামসুল হকের ছেলে আরমান মিয়া এবং নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার শিবপুর (লেংগুরা) গ্রামের মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মালেক।
শ্রীপুরের মাওনায় কওমী মাদ্রাসায় নির্যাতনের শিকার শিশু (৮) কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কুমুরিয়া (পাড়াবালিয়া) গ্রামের বাসিন্দা। সে তার বাবার সাথে মাওনা (উত্তরপাড়া) এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে ওই মাদ্রাসায় নুরানী বিভাগে পড়াশোনা করতো।
ভিকটিমের বাবা জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টায় মাদ্রাসার নুরানী বিভাগে ভিকটিমকে একা পেয়ে লম্পট শিক্ষক আব্দুল মালেক আমার মেয়েকে জড়িয়ে ধরে দুই গালে চুমু দেয় এবং জোরপূর্বক ধর্ষন চেষ্টা করে। এসময় শিশু ডাক চিৎকার দিলে তাকে ছেড়ে দেয় এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। এরপর থেকে শিশু শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় যেতে চায় না। পরে তার বাবা তাকে মারধর করে। শনিবার (৮ মার্চ) রাতে শিশু ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণ চেষ্টার কথা স্বীকার করলে আত্মীয়-স্বজনদের জানালে তারা পুলিশকে জানায়।
শ্রীপুর থানাধীন চকপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ হাসমত উল্লাহ জানান, স্থানীয়দের মধ্যে শিক্ষক কর্তৃক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং যৌন নিপীড়নের ঘটনা প্রকাশ হলে লোকজন মাদ্রাসা শিক্ষককে গণপিটুনি দেয়ার চেষ্টা করে। পরে মাদ্রাসা পরিচালক পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
অপরদিকে, শ্রীপুরের বরমীতে নির্যাতনের শিকার শিশু (৮) উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। শিশুটি জানায় তাকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেছে ধর্ষক আরমান। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুর বাবা জানান, দুপুর থেকেই তার মেয়েকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। সন্ধ্যায় বনের ভেতর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে আরমান মিয়াকে বনের ভেতর থেকে হাতেনাতে আটক করা হয়। গণপিটুনি দিলে সে স্বীকার করে কয়েকটি ভিডিও ধারণ করে তার তিন বন্ধুর মোবাইলে পাঠিয়েছে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আকতার বলেন, উভয় ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়েছে। আসামীদেরকে গ্রেফতার করে রবিবার (৯ মার্চ) গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সায়মা ইসলাম