ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

মসুর ডাল চাষে রাজবাড়ীর কৃষকের ভাগ্যবদল

রাজবাড়ী সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৮:৩১, ৬ মার্চ ২০২৫

মসুর ডাল চাষে রাজবাড়ীর কৃষকের ভাগ্যবদল

ছ‌বি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর শহীদওহাবপুর গ্রামের ৬৫ বছরের কৃষক গফুর কাজী এবার ৫ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল বারি মসুর-৮ চাষ করেছেন। তার মতো জেলার প্রায় ৭ হাজার কৃষক মসুর ডালের আবাদ করেছেন।

রাজবাড়ীর উর্বর মাটিতে এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। কম সেচ ও সার লাগায় ধান, গম ও পাটের চেয়ে বারি মসুর-৮ চাষে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। উৎপাদন খরচের তুলনায় তিনগুণ বেশি আয় হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ৩,৭০০ হেক্টর জমিতে বারি মসুর-৮ আবাদ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১২ মণ ডাল উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। গত বছর ৩,৫০০ হেক্টর জমিতে মসুর ডাল উৎপাদন হয়েছিল ৪,৫৫০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

গফুর কাজী বলেন, আগে দেশি জাত চাষ করতাম, বিঘায় ৩-৪ মণ ফলন হতো। এবার বারি মসুর-৮ চাষে বিঘায় ৮-১০ মণ হচ্ছে। খরচের তুলনায় তিনগুণ লাভ হওয়ায় মসুর চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। বাজারে চাহিদাও বেশি, দামও ভালো পাবো বলে আশা করছি।

কৃষাণী মমতাজ বেগম বলেন, পুরুষদের পাশাপাশি আমরাও মসুর ক্ষেতে কাজ করি। এতে সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে।

৪০ বছরের অভিজ্ঞ কৃষক রফিক খান পাটোয়ারী বলেন, আগে দেশি জাতের মসুর চাষ করতাম, ফলন কম হতো। এখন বারি মসুর-৮ আবাদে বিঘায় ৮-১০ মণ ফলন হচ্ছে, তিনগুণ লাভ হচ্ছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক (ডাল) ড. মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, মসুর ডালে উচ্চমাত্রার দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা রক্তের কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. সেলিম আহম্মেদ বলেন, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে মসুর চাষ বেড়েছে। এতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন,
এ মৌসুমে রাজবাড়ীতে ৩,৭০০ হেক্টর জমিতে বারি মসুর-৮ চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪,৯০০ মেট্রিক টন।

আবীর

×