
ছবি : জনকণ্ঠ
পালাবো না, কোথায় পালাবো! এমন বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সে সময়ও বেশ আলোচনায় ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু ৫ আগস্টের পর কোথাও নেই এই নেতা, যেন কর্পুরের মতন উবে গেছেন।
গেল কয়েকদিনে ওবায়দুল কাদের মারা যাওয়ার একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে এটি গুজব বলেই নিশ্চিত করেছে রিউমার স্ক্যানার। অনেকে আবার এ গুজবও ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ‘র’ এর সেফ হাউজে আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে বিভ্রান্ত করার জন্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়াচ্ছেন মৃতের গুজব বা ভারতে পালিয়ে গেছেন এসব গুজব। মূলত বাংলাদেশে নাশকতার ভারতীয় ষড়যন্ত্র করছেন পলাতক এই নেতা।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে থেকেই অবশ্য গা ঢাকা দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। অনেকে ধারণা করছিলেন, হয়তো ভারতে অবস্থান করছেন এই নেতা। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী গত ৮ নভেম্বর ওবায়দুল কাদের মেঘালয়ের রাজধানী শিলং হয়ে কলকাতায় পৌঁছান। এর আগে তিনি এক বিশেষ স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন।
গণমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, গণঅভ্যুথানের পর তিন মাস পাঁচ দিন তিনি দেশেই ছিলেন। কারো কারো মতে, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। নানা গুঞ্জনের মাঝে এবার প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন প্রকাশ করলেন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন। তিনি দেশ ছেড়েছেন কিংবা মারা গিয়েছেন এসব খবর পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে।
নাগরিক টিভির নাজমুস সাকিবের উপস্থাপনায় একটি অনুষ্ঠানে দাবি করা হয়, ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছিল মোহাম্মদপুরে। তার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার সর্বশেষ সেখানে সচল ছিল। তবে এখানেও রয়েছে এক রহস্য। কোথায় ছিলেন ওবায়দুল কাদের! প্রশ্নের উত্তরে আবার জড়িয়ে যায় ঢালিউডের নবাগত এক নায়িকার নাম।
গত সেপ্টেম্বরে মারা যান নবাগতা নায়িকা মেঘলা। মেঘলার ফোন অটোপসি করে দেখা যায়, মেঘলার সাথে যোগাযোগ ছিল ওবায়দুল কাদেরের। সর্বশেষ যেখানে ওবায়দুল কাদেরের ফোন সচল পাওয়া যায়, মেঘলার বাসাও ছিল তার আশেপাশেই। কিন্তু মেঘলার বাসায় ওবায়দুল কাদের কেন!
সাবেক সামরিক কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামের ভাষ্যমতে, ওবায়দুল কাদের মেয়ে নিয়েই থাকতেন সারাক্ষণ। গণমাধ্যমকে শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঢাকায় চারটি সেফ হাউস আছে ওবায়দুল কাদেরের শুধু মেয়েদের রাখার জন্য। গণমাধ্যমে ধানমন্ডি ছয় নম্বর সড়কের একটি বাসার খোঁজও দেন তিনি।
অনেকের ধারণা, মেঘলার মৃত্যুতে হাত রয়েছে ওবায়দুল কাদেরের। মেঘলা যাতে ওবায়দুল কাদেরের কথা ফাঁস করতে না পারে, তাই মেঘলাকেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। দেশে বসে কি করছেন ওবায়দুল কাদের!
৫ আগস্টের পর সাংগঠনিকভাবে ওবায়দুল কাদেরকে কোথাও দেখা যায়নি। আত্মগোপনে থাকা কিংবা বিদেশে পালিয়ে যাওয়া নেতাদের সাথেও যোগাযোগের রেকর্ড পাওয়া না গেলেও, যোগাযোগের চেষ্টা করছেন ওবায়দুল কাদের এমনটা জানা যায়। জানা যায়, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করছেন ওবায়দুল কাদের।
বর্তমান সরকার, বিএনপি, জামায়াত, সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি ষড়যন্ত্রের কথা সামনে আনছে বারবার। তাদের বক্তব্য, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশের বাইরে বসে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যদি ওবায়দুল কাদের দেশেই থাকেন, তবে কি তিনি দেশে বসেই ষড়যন্ত্র করছেন বা ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন করছেন।
মো. মহিউদ্দিন