ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১

গণপরিষদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য মাসুদ কামাল ও আরিফ সোহেলের

প্রকাশিত: ২৩:০১, ৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২৩:০২, ৪ মার্চ ২০২৫

গণপরিষদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য মাসুদ কামাল ও আরিফ সোহেলের

ছবিঃ সংগৃহীত

বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে গণপরিষদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল।

উপস্থাপিকার প্রশ্ন ছিল, আপনারা গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছেন, একটু বলবেন যে গণপরিষদ নির্বাচনটা কীভাবে হবে, আপনাদের দাবি কী বা কী চাইবেন আপনারা?

উত্তরে আরিফ সোহেল বলেন, এই যে আদর্শের প্রশ্ন, গণপরিষদ কিন্ত একটা আদর্শিক জায়গা থেকেই চাওয়া হচ্ছে। কিন্ত ৭০-৮০ দশকেও চিন্তা হচ্ছে আপনি আপনার আদর্শের জায়গা এক শব্দে সংজ্ঞায়িত করবেন ন্যাশনালিজম, সোশ্যালিজম। এটার প্রসঙ্গতা এখন আর নাই, আমি এটাই বুঝাতে চেয়েছি। তাহলে কিসের প্রাসঙ্গিকতা দেখতে পাচ্ছি আমরা, গণপরিষদের প্রাসঙ্গিকতা। কারণ হচ্ছে ২৪ সালে জনগণ, বাংলাদেশের প্রচলিত যে সমস্ত আইন ছিল এবং রেগুলেশন্স ছিল সবগুলোকে তারা অস্বীকার করেছে। অস্বীকার করে বলেছে, আমরা বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যমান সকল আইনকে অস্বীকার করলাম। সবাই যেভাবে নেমে এসেছে, কোন প্রকার আইন কি আস্ত আছে? 

সেই সাথে জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন একটা আকাঙ্খা হাজির করেছেন। রাষ্ট্র এখন নতুন নিয়মে চলবে। যদি এই আকাঙ্খা টা না আসতো, তাহলে পূর্ণাঙ্গ গণঅভ্যুত্থান গণভবন ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে যাওয়া,সংসদ ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে যাওয়া এটা ঘটতো না। একটা সমাজের মানুষ যখন ওই সমাজের রুলস, রেগুলেশন্স, নর্মস কিছু অংশও মানতে আগ্রহী থাকে তখন কিন্ত এমন করে না। কোন না কোন জায়গায় সংযম দেখায়। মানুষ পুরোপুরি ভাবে বিদ্যমান আইনের সবকিছু অস্বীকার করছে এই জন্যই যে, তারা আগের রাষ্ট্র কাঠামো ছুড়ে ফেলতে চায়। তাহলে বিদ্যমান সংবিধান ছুড়ে ফেলার আকাঙ্খা ইতোমধ্যে চলে এসেছে। 

গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য বিএনপি ও বড় দলগুলো রাজি হয় আমরা এখনই আলোচনায় বসবো, কবে কীভাবে এটার আয়োজন করা যায়। 

এরপর উপস্থাপিকা সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামালকে প্রশ্ন করেন, এখন একটা সরকার আছে, সেই সরকার কি গণপরিষদ নির্বাচন করতে পারবে? 

জবাবে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, গণপরিষদ নির্বাচন যে কেউ করতে পারে। এটা কোন ব্যাপার না। গণপরিষদের মূল তাত্ত্বিক বিষয় হলো নতুন একটি সংবিধান করা হবে, সেই সংবিধান গণপরিষদে পাশ হবে। সংবিধান তো জনগণের প্রোপার্টি, এটা তো চাপিয়ে দেয়া যাবে না। কিন্ত জনগণের মতামত কীভাবে নিবেন, একটি পদ্ধতি হলো জনগণ কিছু ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবে তারা বলবে নতুন সংবিধান নেয়া যায় বা নেয়া যায় না, অথবা এই নির্দিষ্ট অংশ নেয়া যায়, অন্যটুকু নেয়া যায় না। এইটা করার জন্য আপনি সারাদেশ ব্যাপী একটা নির্বাচন করবেন, কেনো? 

ডক্টর ইউনূস বিবিসি বাংলার সাক্ষাৎকারে কী বলেছেন? বলেছে যে বিভিন্ন পয়েন্ট এসেছে সংস্কারের বিষয়ে, একমত বা দ্বিমত, এগুলো নির্বাচনের পরে হবে বা আগে হবে। এই সংবিধান নিয়েও একমত বা দ্বিমত হতে পারে৷ যদি আপনি পলিটিকাল পার্টি গুলোর মতামত নেন। ইলেকশন যখন হবে তারা ইলেকশনের পরে ইলেক্টেড মেম্বাররা ঠিক করবে, তারা তো জনগণের প্রতিনিধি, তারা ঠিক করবে এটা গ্রহণ করবে কি করবে না। 

ইলেকশন কীভাবে হবে তার জন্য একটা সংস্কার কমিশন আছে, তাদের মতামত আনেন। এখন গণপরিষদ নির্বাচনটা করতে চাচ্ছেন কেন, এই সংবিধানটা রেটিফাই করার জন্য। কত টাকা খরচ হবে তাতে, প্রায় ১৭০০-১৮০০ কোটি টাকা খরচ হবে। আপনার এই ইলেকশন করে লাভ কী।

তার থেকে বড় কথা আমাদের দেশের মানুষ কি গণপরিষদ নির্বাচনের সাথে পরিচিত? যখন তার কাছে ভোট চাইতে যাবেন, কী উপলক্ষে ভোট চাইবেন। আমার মনে হয় এটার কোন প্রয়োজনীয়তা নাই।

 

সূত্রঃ https://youtu.be/e82b0FNXqOk?si=0TpCaID63oHs77kH

রিফাত

×