ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১

গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৯:০৪, ১ মার্চ ২০২৫

গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি

ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আদর্শের বিপক্ষে অবস্থান এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রক্ষার পক্ষে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেয়ায় অগ্রণী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাছের বখতিয়ার আহমেদকে পদত্যাগ ও অপসারণের দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ব্যাব) এবং ফ্যাসিজম ও বৈষম্যবিরোধী নির্বাহী কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

আজ শনিবার (১ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিললায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ দাবি জানান। এখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ’র সদস্য সচিব মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

বক্তারা বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাছের বখতিয়ার আহমেদের অনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যাংকের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নানাভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছেন।”

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে অন্যায়ভাবে ও অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ করছেন জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, “তিনি ব্যাংক কোম্পানি আইন ও বিআরপিডি সার্কুলারের সম্পূর্ণ লংঘন করছেন। তার কার্যক্রম পতিত সরকারের দোসরদের উৎসাহিত করছে। অত্যন্ত বিতর্কিত পদক্ষেপ হলো তিনি সাম্প্রতিক জুলাই ২৪ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আদর্শের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রক্ষার পক্ষে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন, যা জনগণের ন্যায্য আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী।”

স্বৈরাচার পতনের পর ব্যাংক সেক্টরে আবু নাছের নব্য স্বৈরাচারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন উল্লেখ করে বক্তারা জানান, “তিনি তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে দাঁড়িয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মহানায়কদের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু গত ১৫ বছরে আওয়ামী দুঃশাসন, খুনগুম, দর্শন ও আয়না ঘরের নৃশংসতার বিরুদ্ধে তিনি একটি শব্দ উল্লেখ করেননি। জুলাই বিপ্লবের গণহত্যার বিরুদ্ধে তিনি কখনোই মুখ খোলেননি। নিরাপরাধ মানুষ হত্যা ও শিশু হত্যার বিরুদ্ধে একটুও প্রতিবাদ জানাননি।”

মতবিনিময় সভায় বক্তারা অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “ধানমন্ডি ৩২ এর বাড়ি ভাঙ্গার প্রতিবাদ করে তিনি শহীদদের আত্মত্যাগকে অপমান ও অস্বীকার করেছেন। তিনি তথাকথিত সুশীল সমাজের নামে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাই আমরা তাকে অপসারণ করার দাবি জানাই এবং আজ থেকে তাকে আর ব্যাংকে ঢুকতে দেয়া হবে না।”

ব্যাংকে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে দাবি মানা না হলে অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানান উপস্থিত বক্তারা।

ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ব্যাব) এবং ফ্যাসিজম ও বৈষম্যবিরোধী নির্বাহী কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ (বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বিডিবিএল, বেসরকারি ব্যাংক ইউনিট) এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।

এই সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এভিপি মোহাম্মদ জাইদুল ইসলাম, প্রাইম ব্যাংকের এভিপি গোবিন্দ চাঁন্দ কুন্ডু, সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ আবুল বাশার, সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার সুভাষ চন্দ্র চাকমা, অগ্রণী ব্যাংকের এজিএম মোঃ সুজাউদ্দৌলা, অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, রূপালী ব্যাংকের এজিএম মোহাম্মদ আবু জাফর, জনতা ব্যাংকের এজিএম মনির আহমেদ, জনতা ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হাফিজুর রহমান, সোনালী ব্যাংকের এজিএম মনজুরুল ইসলাম ও সোনালী ব্যাংকের এজিএম রেজাউল করিম।

রাকিব

×