
ছবি: সংগৃহীত।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা না থাকলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিজয় অর্জন সম্ভব হতো না, বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষক ও সাংবাদিক সাইয়েদ আব্দুল্লাহ। সম্প্রতি গণমাধ্যমের একটি টকশোতে তাকে এই কথা বলতে শোনা যায়।
সাইয়েদ আবদুল্লাহ আরও বলেন, "আমি ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন হয়, তখনও আমি রাস্তাতেই ছিলাম। ২০২৪ আন্দোলনেও একদম সামনে থেকেই দেখেছি, পার্টিসিপেট করেছি এবং সবকিছুর পরে আমার একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং যেটা হয়েছে, সেটা হলো এই যে, আরবান মিডল ক্লাসের একটা বড় অংশ, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরা, তারা যদি এই আন্দোলনে না আসতো, ২০১৮ সালের আন্দোলন যেভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল, এই ২০২৪ সালের আন্দোলনটাও একই জায়গায়, একইভাবে যেত এবং এটা থেমে যেত। এই যে থামলো না, এই পার্থক্যটা তৈরি করে দিয়েছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরা।"
তিনি আরও বলেন, "যেটা সত্য, সেটি বুক ফুলে বলা উচিত। যদি আমরা ডানে-বামে চলে যাই, তাহলে নতুন বন্দোবস্তের কিছুই হয়নি। ওই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সত্যকে ইগনোর করার যে কালচার, সেটাই তো টিকে থাকলো। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরা, আমি যেটা ফিল করি, তার কথা ১০০% সঠিক, ওই স্টেটমেন্টটাও। কারণ তারা তো বিসিএসের জন্য খুবই কম সংখ্যক মানুষ বসে, ইনফ্যাক্ট বসেই না। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের এই আন্দোলনে ঢোকার ইনসেন্টিভটা কোথায় ছিল?"
তিনি আরও বলেন, "পাবলিক ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরা সিএসএ (কোটা আন্দোলন) এটেন্ড করে, এবং অনেক মানুষ আছে যারা ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির এই টাইপ একটা ডামি ইলেকশনে তারা হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে, যে তারা গণতান্ত্রিক অভিপ্রায়র জন্য একটি পাতান ইলেকশনে অংশ নিচ্ছে। তাদের কাছে অনেকের কাছে এমন মনে হয়েছে, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এসে হঠাৎ করে স্বৈরাচার হয়ে গেছে। বিগত ১৫ বছরে কিছুই ম্যাটার করে না।"
তিনি শেষাংশে বলেন, "যদি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরা না নেমে আসতো, তাহলে এই আন্দোলনটা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ভেতরে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকতো। শুধু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টরা নয়, হাই স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছে, তাদেরকেও অনেকে ভুলে যাচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়, তাদের যে গ্রিভেন্সের জায়গাটা, সেটি অবশ্যই সত্য।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের টিপিক্যাল ছাত্র রাজনীতি মানে শুধু স্লোগান দেয়া, মিটিং-মিছিল করা না। বরং রাজনীতি নৈতিকভাবে সচেতন হয়ে ওঠাটা সবার জন্য জরুরি। আমি প্রত্যেকটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে যখন গেস্ট হিসেবে যাই, তাদেরকে আমি বলি, রাজনীতি করা মানে শুধু মিটিং-মিছিল করা না, বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে পার্লামেন্টারি ডিবেট হতে পারে। তবে, তাদেরকে যদি রাজনৈতিক সচেতনতা থেকে দূরে রাখা হয়, তাহলে ন্যাশনাল পলিটিক্সেও তাদেরকে ইগনোর করা হবে।"
এভাবে সাইয়েদ আবদুল্লাহ তার বক্তব্যের মাধ্যমে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে তার চিন্তা ও পর্যবেক্ষণ ব্যক্ত করেন।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=mno9sFau1Yk&ab_channel=JamunaTV
নুসরাত