ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শংকর সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের "অতিমাত্রায় হাস্যকর" বলে অভিযোগ ও তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি এই মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হাসানের সঙ্গে ওমানে বৈঠকের পর, যখন দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
জয়শংকর বলেন, "যদি প্রতিদিন বাংলাদেশের সরকার থেকে কেউ উঠে এসে ভারতকে সবকিছুর জন্য দায়ী করে, তা সত্যিই হাস্যকর। আপনি একদিকে বলছেন 'আমরা ভালো সম্পর্ক চাই', কিন্তু অন্যদিকে আপনি প্রতিদিন সকালে উঠে ভারতকে দায়ী করছেন। এটা একটা সিদ্ধান্ত যা তাদের নিতে হবে।"
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা তুলে ধরে, যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং মুক্তি বাহিনী দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানকে মুক্ত করার সময় থেকে শুরু, জয়শংকর বাংলাদেশের কাছে এই প্রশ্নটি তুলেছেন যে তারা কী ধরনের সম্পর্ক চায় ভারতের সঙ্গে।
এছাড়া, জয়শংকর দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন যা বর্তমান ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথমত, জয়শংকর বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের ওপর যে আক্রমণগুলো হচ্ছে, তা আমাদের জন্য খুব উদ্বেগজনক। এটা আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। আমরা এই বিষয়ে সরব হবো, এবং ইতোমধ্যেই হয়ে গেছি।”
ভারত বারবার বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই এই হামলাগুলি বাড়তে থাকে, এবং তার শাসনবিরোধী আন্দোলনগুলো আরও তীব্র হয়।
দ্বিতীয়ত, জয়শংকর বাংলাদেশে চলমান অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করেন, যা তার মতে, এমন কিছু হতে পারে যা অন্যরা সম্মত হোক বা না হোক, তবে তিনি জানান, "ভারত স্পষ্টভাবে চেয়েছে যে পরিস্থিতি শান্ত হোক, কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে ভারতের প্রতি এই ধরনের শত্রুতামূলক বার্তা আর সহ্য করতে পারি না।"
এটি প্রথমবার নয়, জয়শংকর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হাসানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, যা দুই দেশের মধ্যে গত এক বছরের মধ্যে প্রথম উচ্চ-স্তরের আলোচনা ছিল।
মারিয়া
