
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড (USAID) ভারতের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার তহবিল বরাদ্দ করেছিল জো বাইডেন সরকার-ক্ষমতা গ্রহণের পরই এমন অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের।
কিন্তু ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ পত্রিকার এক চাঞ্চল্যকর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, এই মার্কিন তহবিল ভারত নয়, বরং বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। তবে কিছুদিন আগেই তা বাতিল করা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের জন্য ইউএসএইড মোট ১৩.৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক ও নাগরিক সম্পৃক্ততা তৈরি করা। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন ‘গভর্নমেন্ট স্কিলস ডিপার্টমেন্ট’ থেকে প্রকাশিত নথিতে বলা হয়েছে, ইউএসএইড সিইপিপিএস (CEPPS) নামক একটি সংস্থার মাধ্যমে এই অর্থ বরাদ্দ করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৮ সালের পর থেকে ভারতের জন্য আর কোনো মার্কিন তহবিল বরাদ্দ করা হয়নি। তবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে ‘আমার ভোট আমার নাম’ ক্যাম্পেইনের আওতায় বাংলাদেশে ২১ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়।
ইউএসএইডের পলিটিক্যাল প্রসেসেস অ্যাডভাইজার লুবাইন মাসুম ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তার লিংকডইন অ্যাকাউন্টে এই তথ্য শেয়ার করেন। তার পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ১৩.৪ মিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে এবং প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত চলবে।
তবে এই প্রতিবেদন ঘিরে ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা অমিত মালব্য এই প্রতিবেদনকে বিভ্রান্তিকর বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এক টুইটবার্তায় অভিযোগ করেন, ২০১২ সালের ঘটনার বিষয়ে চতুরতার সঙ্গে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
অমিত মালব্যর মতে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার তখন ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস (IFES) এর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল। এই সংস্থাটি বিশ্বের অন্যতম বিতর্কিত ধনী জর্জ সোরোসের ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’-এর অধীনস্থ বলে দাবি করেন তিনি। বিজেপির মতে, সোরোস দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে ভূমিকা রাখছেন।
বিজেপির এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। দলটি ইতোমধ্যে ভারতীয় পার্লামেন্টে একটি ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশের দাবি জানিয়েছে, যাতে মার্কিন ইউএসএইডের অর্থায়ন কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব দেওয়া হয়।
আফরোজা