ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

পক্ষ-বিপক্ষের দ্বন্দ্ব

জনপ্রশাসনে অসন্তোষ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরোধিতা

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:১৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জনপ্রশাসনে অসন্তোষ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরোধিতা

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ

আবার প্রশাসনে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রতিবেদন ঘিরে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠনগুলো বিরোধিতা করছেন তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সুপারিশের। বিভিন্ন সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিচ্ছেন কর্মকর্তারা। এমনকি সুপারিশের বিরোধিতা করে বিবৃতি নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ানোর ঘটনাও ঘটছে। এতে বিশৃঙ্খলা বাড়তে পারে।
সংস্কার কমিশনের সদস্যরা বলছেন, দেশ ও মানুষের স্বার্থ ঊর্ধ্বে রেখে তারা সুপারিশগুলো দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে হয়তো কোনো ক্ষুদ্র গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে বলে মনে করতে পারে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ও প্রশাসনে দীর্ঘদিনের বৈষম্য দূর করতে ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার আনতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গত ৩ অক্টোবর আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। পরে কমিশনের সদস্য সংখ্যা আরও তিনজন বাড়ানো হয়।
সুপারিশ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশনকে ৯০ দিন (তিন মাস) সময় দেওয়া হয়। এরপর তিন দফা মেয়াদ বাড়ানো হয় কমিশনের। শেষে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় কমিশন। কমিশনের প্রতিবেদনকে মোট ১৭টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করা হয়েছে। দুই শতাধিক সুপারিশ পেশ করা হয়েছে ১৪টি শিরোনামে। কমিশন সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের সুবিধার্থে স্বল্পমেয়াদি (ছয় মাস), মধ্যমেয়াদি (এক বছর) ও দীর্ঘ মেয়াদি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদন দাখিলের পর বিভিন্ন সুপারিশের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিবৃতি বা প্রতিবাদলিপি দিয়েছে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএস) ও বাকি ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।

এ ছাড়া কৃষি, পরিবার পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠনও আলাদা করে ক্যাডার সংশ্লিষ্ট সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে। এর আগে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের খসড়া সুপারিশ নিয়েও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ক্যাডার কর্মকর্তারা। তখন কমিশন প্রকাশিত কয়েকটি খসড়া সুপারিশ ঘিরে আন্তঃক্যাডার দ্বন্দ্ব ও চরম আকার ধারণ করেছিল, যার রেশ এখনো আছে।
কমিশনের সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. মো. হাফিজুর রহমান ভুঞা বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবেদন তৈরি করে দিয়েছি, এখন এটার ভালো-মন্দ যাচাই করবে মানুষ। যে কোনো কাজ করতে গেলে কিছু লোক সুবিধা পায়, কিছু লোকের হয়তো প্রত্যাশা পূরণ হয় না। তবে কারও প্রত্যাশা থাকতেই পারে, তবে সেটা কতটুকু যৌক্তিক সেটাও বিবেচনা করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি সবার ওপরে দেশের স্বার্থ রক্ষা করার। কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের স্বার্থকে আমরা বড় করে দেখিনি। আমরা জাতি হিসেবে তো খুব একটা এগোতে পারিনি। একটি জায়গায়ই ঘুরপাক খাচ্ছি। এ কারণে বহু মানুষকে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। যে জন্য এই ত্যাগ, সেটি (সংস্কার) যদি আমরা বাস্তবায়ন না করতে পারি, তা হলে তো হলো না। তাই আমরা দেশটাকে সামনে রেখে কাজটি করেছি।

এতে হয়তো অনেকে মনে করতে পারে, আমরা মনে হয় বঞ্চিত হয়েছি। দেখতে হবে দেশটা কীভাবে আরও ভালোভাবে এগোবে। কর্তৃত্বপরায়ণ কোনো সরকার যাতে আর দেশের ওপর চেপে না বসে। এছাড়া যাদের মানুষের সেবা করার কথা, তারা যদি নির্যাতন করে তা হলে তো হবে না।

জনপ্রশাসনসহ জমা দেওয়া অন্য পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশন কমিশনগুলোর সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের জন্য জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপের সুপারিশ করবে।
উপসচিব পদোন্নতির সুপারিশ নিয়ে আপত্তি প্রশাসন ক্যাডারের ॥ কমিশন সুপারিশে জানিয়েছে, বাস্তবতার নিরিখে প্রশাসনিক সার্ভিসের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় বর্তমানে উপ-সচিব পদের ৭৫ শতাংশ ওই সার্ভিসের জন্য সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা রাখা আছে। সব সার্ভিসের সমতা বজায় রাখার স্বার্থে এবং জনপ্রশাসনের উচ্চতর পদে মেধাবীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন প্রশাসনিক সার্ভিসের (প্রশাসন ক্যাডার) ৭৫ শতাংশ কোটা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার বিষয়টি অধিকতর যৌক্তিক মনে করছে।

অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ পদ অন্য সার্ভিসের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলার রায় ও পর্যবেক্ষণ রয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির আইনগত দিক পরীক্ষা করে দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। উপ-সচিব পদে কমিশনের এ সুপারিশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি এ সুপারিশকে আদালতের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে দাবি করেছে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিএএসএর সভাপতি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ বিষয়ে একটি মামলা সুপ্রিম কোর্টে প্রায় ১০ বছরব্যাপী সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আপিল বিভাগের রায় ও রিভিউ শেষে ২০১৬ সালে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয় এবং উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।

আপিল বিভাগ প্রশাসন ক্যাডারের প্রাসঙ্গিক কর্ম অভিজ্ঞতা ও ঐতিহাসিকভাবেই প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে উপসচিব পদটির সম্পর্ক বিবেচনায় উপসচিব থেকে তদূর্ধ্ব পদে প্রশাসন ক্যাডারের সহজাত অধিকার আছে এবং অন্য ক্যাডারের সহজাত অধিকার নেই বলে ঘোষণা করে। সুতরাং, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এই মতামত উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা বিষয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

অ্যাসোসিয়েশন আরও জানায়, উপসচিব প্রশাসন ক্যাডারের সহজাত পদ, তাই পদসোপান অনুযায়ী উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারকে শতভাগ পদোন্নতি না দিয়ে এর পরিবর্তে পার্শ্ব-নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, যা যৌক্তিক নয়।
২৫ ক্যাডারেরও আপত্তি ॥ গত ৮ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের আন্তঃক্যাডার  বৈষম্য নিরসন পরিষদের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার, ডিএস পুলে কোটা বাতিল এবং সব ক্যাডারের সমতার দাবি কমিশনের কাছে তুলে ধরা হলে তাদের প্রতিবেদনে সেই দাবির প্রতিফলন ঘটেনি।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অস্পষ্ট রিপোর্ট ও জনবিরোধী প্রস্তাবগুলো প্রত্যাখ্যান করছি’ জানিয়ে পরিষদ জানায়, কমিশনের প্রস্তাবিত প্রশাসন ক্যাডারের নামের সঙ্গে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ’ শব্দ রাখা অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয়, বিভ্রান্তিকর ও আপত্তিকর। পরিষদ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, কমিশন প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ এবং বাকি ২৫ ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ দিয়ে হাস্যকর ও অযৌক্তিক প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে।

উপসচিব পদে কোনো কোটা মেনে নেওয়া হবে না। কমিশনের এ প্রস্তাব সংশোধন করে শতভাগ সব ক্যাডারের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তারা বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, কিছু প্রস্তাব সংবিধান ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তা ছাড়া রিপোর্টের কিছু প্রস্তাব একে অপরের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পেলে খুঁটিনাটি যাচাই করে লিখিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। 
সুপারিশ নিয়ে আরও যাদের অসন্তোষ ॥ সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিস পুনর্গঠন প্রস্তাবে প্রস্তাবিত সার্ভিসগুলোতে অন্তর্ভুক্ত না করায় সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি এক প্রতিবাদলিপিতে জানায়, কমিশনের প্রতিবেদনে বিদ্যমান সিভিল সার্ভিসগুলোকে পুনর্বিন্যাস করে বিভিন্ন সার্ভিস ও এর কাঠামো পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হলেও একমাত্র বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারকে পুনর্গঠিত সার্ভিসগুলোর প্রস্তাবে প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করা হয়েছে।

দাখিল করা সংস্কার প্রস্তাবে ১৯৮০ সালে সৃজিত গুরুত্বপূর্ণ পেশাভিত্তিক এ ক্যাডার সার্ভিসকে ‘অস্তিত্বহীন’ করার মতো অদূরদর্শী সুপারিশ আমাদের অত্যন্ত বিস্মিত ও ব্যথিত করেছে। সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা এবং ছাত্রজনতার বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে এ সুপারিশ সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।

মূলত সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মাধ্যমে বিবিএসে নিযুক্ত মেধাবী পরিসংখ্যানবিদদের সমন্বয়ে গঠিত এ সার্ভিসকে অবমূল্যায়ন করে আরেকটি নতুন বৈষম্য চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) সাধারণ ক্যাডার সংশ্লিষ্ট ‘সংস্কার বা পুনর্গঠন প্রস্তাব’ না থাকায় বিবৃতি দিয়েছে এ ক্যাডার সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন। বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের ফলে অন্য ক্যাডারের মতো বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) সাধারণ ক্যাডার সংশ্লিষ্টরাও বৈষম্যের অবসানের যে আলো দেখতে পেয়েছিলেন তা উক্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে স্থিমিত হয়ে গেছে।

বিবৃতিতে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়ে ক্যাডার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পরিবার পরিকল্পনা) অ্যাসোসিয়েশন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসনের সংস্কার কমিশনের ‘সাধারণ’, ‘অনুষ্ঠান’, ও ‘বার্তা’কে একীভূত করে তথ্য সার্ভিস গঠনের সুপারিশের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বিসিএস (তথ্য-সাধারণ) ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
বিসিএস (তথ্য-সাধারণ) ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ভিন্ন প্রকৃতির তিনটি গ্রুপ ‘সাধারণ’, ‘অনুষ্ঠান’ ও ‘বার্তা’কে একীভূত করে বাংলাদেশ তথ্য সার্ভিস নামে যে সার্ভিস গঠনের কথা বলা হয়েছে, তাতে এ ক্যাডারের সদস্যদের উদ্বেগের কারণ রয়েছে। গ্রুপ তিনটির কর্মপ্রকৃতি এতটাই ভিন্ন যে এগুলোকে কোনো একক সার্ভিসে একীভূত করা হলে তা একটি অকার্যকর সার্ভিসে পরিণত হতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিসিএস (তথ্য-সাধারণ) ক্যাডারের সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের কোনো অংশকে একীভূত করা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাজের মান বৃদ্ধি, কর্মকর্তাদের কল্যাণ কিংবা জনস্বার্থ কোনোটির জন্যই যৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হয় না। বিদ্যমান বাস্তবতায়, কেবল বিসিএস (তথ্য-সাধারণ) গ্রুপকে নিয়ে বাংলাদেশ তথ্য সার্ভিস করা যায়।

পাশাপাশি প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের নামের সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য একটি স্বতন্ত্র ‘সম্প্রচার সার্ভিস’ গঠন করা যেতে পারে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত একীভূত তথ্য সার্ভিস বিষয়ে বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিসিএস তথ্য সাধারণ বেতার কর্মকর্তারা।

একই দিন বিসিএস তথ্য সাধারণ বেতার কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি এক বিবৃতিতে জানায়, বিসিএস ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশন নামে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ও তথ্য অধিদপ্তরে কর্মরত বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের একটি সাব ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠনের বিবৃতিতে অত্যন্ত অপেশাদার ও ঠুনকো কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

আমরা প্রথমেই এ ধরনের বিবৃতির তীব্র নিন্দা জানাই। এভাবেই পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিবৃতি-বক্তব্য চলছে গত কয়েক মাস ধরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সংশ্লিষ্টরা বেশ সরগরম। আগে থেকেই চলা এ অসন্তোষ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ঘিরে ক্রমে বাড়ছে।

×