ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১

ভারতকে ঠেকাতে বাংলাদেশের পাশে তুরস্ক!

প্রকাশিত: ২১:৪১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০০:৩৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভারতকে ঠেকাতে বাংলাদেশের পাশে তুরস্ক!

ছবি : সংগৃহীত

দিন যতই যাচ্ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গ্রাস করছে হতাশার চরম অন্ধকার। বন্ধু ট্রাম্প থেকে পাচ্ছেন একের পর এক ধাক্কা। দলে টানতে পারছেন না প্রতিবেশী কোন দেশকে। আয়ত্তে নেই সেভেন সিস্টারসও।

এত সবকিছুর মধ্যে মোদির কপালে আরেকটি চিন্তার ভাজ জুড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ তুরস্ক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। বিষয়টি প্রতিবেশী ভারতের জন্য ঠিক কত বড় হুমকি, তা বুঝতে বাকি নেই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েব এরদোয়ান, বলা হয় তিনি যতটা জনপ্রিয়, ঠিক ততটাই ভয়ানক। বাংলাদেশের পাশে তার অবস্থান পাল্টে দিতে পারে পাশার দান। সম্প্রতি তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর ওমর বেলাদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তুরস্ককে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে সম্মতিও জানিয়েছে তুরস্ক।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে বিশ্বনেতা ভাবতেই ভালোবাসেন। তিনি ব্রিটেনের রাজপ্রাসাদে গেছেন, বিশাল সংবর্ধনা পেয়েছেন আমেরিকায়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে বন্ধুর মতো করেছেন। কিন্তু তার নিজের প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা কেউই তাকে চাইছে না। এই তিক্ত সত্য মোদির মনের ভেতর কাটার মতো বিচ্ছে প্রতিনিয়ত।

বাংলাদেশ সফরের পর তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর ওমর বেলাদ বলেন, “বাংলাদেশ এবং তুরস্ক টেক্সটাইল শিল্প ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৈচিত্র্যময় করতে পারে। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্প, স্বাস্থ্য সেবা, ফার্মাসিউটিকিউলাস এবং কৃষিযন্ত্র খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।”

তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “বাংলাদেশের আমদানির ক্ষেত্রে ভারত এবং অন্যান্য বাজারের জায়গা নিতে পারে তুরস্ক। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে সব স্তরেই হতে পারে সহযোগিতা।”

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ এবং তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যেও পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি তুরস্কের এমন আগ্রহ অনেকটা চোখে মুখে অন্ধকার দেখাচ্ছে প্রতিবেশী ভারতকে।”

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উপর দীর্ঘকাল ধরে যে রাজনৈতিক প্রভাব এবং আধিপত্য ভারত গড়ে তুলেছিল তা বাংলাদেশ সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এক লহমায় ভেঙে পড়েছে। দিল্লি হয়তো কল্পনাও করেনি তাদের দীর্ঘমেয়াদী মিত্র দেশটি একদিন এমন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে ভারত সরকারের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক হতাশা।

মো. মহিউদ্দিন

×