ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১

ভারতের পানি আগ্রাসন রুখতে সোচ্চার বিএনপি

প্রকাশিত: ০১:১৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভারতের পানি আগ্রাসন রুখতে সোচ্চার বিএনপি

ভারত বাংলাদেশের অভিন্ন নদীগুলোর পানি একতরফা ভাবে নিয়ে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করছে, আবার বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করছে। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপি তিস্তা পাড়ে অবস্থান কর্মসূচি সম্পন্ন করেছে। “জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই” স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন এই কর্মসূচি দেয়। কয়েক লাখ মানুষ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। 


বুধবার  ভোরে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি। সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছিল এই লাগাতার কর্মসূচি। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাটের তিস্তা রেল সেতুসংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।


মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইলে ভারতকে তিস্তার পানি দিতে হবে, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে হবে এবং ঔপনিবেশিক মনোভাব ত্যাগ করতে হবে।”


বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত আন্তঃসীমান্ত নদীর পানিবণ্টন নীতিকে তোয়াক্কা না করে ভারত একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করছে। শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে ৩৬টিতে বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত, যা আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী সম্পূর্ণ বেআইনি। বিএনপি অভিযোগ করেছে, শেখ হাসিনার সরকার ভারতের অন্যায় নীতির বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান না নিয়ে বরং নতজানু আচরণ করছে।


তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীন ৮০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল এবং প্রকল্পের সমীক্ষা ও নকশাও প্রস্তুত করেছিল। কিন্তু ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির চাপের কারণে সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন থেকে সরে আসে।


বিএনপির দাবি, এটি ভারতের ষড়যন্ত্র, যাতে বাংলাদেশ চিরস্থায়ী পানি সংকটে ভুগতে থাকে। বিএনপি বলছে, “বাংলার মানুষ বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে, তাই ভারতের এই আগ্রাসন মেনে নেওয়া হবে না।”


বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ভারতের পানি আগ্রাসন যদি এখনই প্রতিহত না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের বিশাল অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মরুভূমি সাহারা একসময় ছিল পানির আধার, কিন্তু পানি সংকটের কারণেই তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। যদি বাংলাদেশ এখনই কঠোর অবস্থান গ্রহণ না করে, তাহলে একদিন বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ হয়েও বাংলাদেশ পানির অভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।


বিএনপি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান আন্দোলন আরও জোরদার করবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই আন্দোলনকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা হবে। বিএনপির দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাড়া দেশের স্বার্থরক্ষা সম্ভব নয়। বিএনপি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ভারতের অন্যায় পানি আগ্রাসন প্রতিহত করতে প্রয়োজন হলে আরও বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।


সূত্র:https://tinyurl.com/42rpnaze

আফরোজা

×