ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

লালন-বাউল ফিলোসফীকে আঘাত কইরেন না: আসিফ সৈকত

প্রকাশিত: ১৩:২৭, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

লালন-বাউল ফিলোসফীকে আঘাত কইরেন না: আসিফ সৈকত

ছবি: সংগৃহীত।

সময়ের আলোচিত বিশিষ্ট অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট আসিফ সৈকত লালন-বাউলদের ফিলোসফী নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারী তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

মি. আসিফের পোস্টটি হবুহু তুলে ধরা হলো:

“প্রত্যেকের ফিলোসফীকে রেসপেক্ট করেন ।  নাস্তিক্যবাদও ফিলোসফী , সেটাকেও আঘাতের প্রয়োজন নাই । 
প্রয়োজন নাই ভান্ডারী বা মাজার ফিলোসফীকে আঘাত করা ।  যখন কেও ইনটেনশনালী বা শতানের আছর পায়া আপনার ফিলোসফী , অনুভূতিবোধকে আঘাত করবে - আপনি রেসপন্স করার পূর্ণ অধিকার সংরক্ষণ করেন। 
একটা ভিডিওতে দেখলাম একজন লালন ভক্তের চুল দাঁড়ি , হাতের সূতাগুলো কয়েকজন ছেলে কেটে দিচ্ছে জোর পূর্বক। সেই বাউল হাউমাউ করে কাঁদছেন। 

আমার জীবনের ২০০১-২০০৫ পর্যন্ত আমি নিয়মিত লালনের আখড়ায় যেতাম।  লালনের ফিলোসফী আমার মারাত্মক স্ট্রং ফিলোসফী মনে হয় । লালন ভক্তরা মারাত্মক সাদামাটা জীবন যাপন করে , নিজেদের মতো গান বাজনা করে , ট্রু লালন ভক্তরা সৎ হয় , কাওকে কোনোদিন ঠকিয়েছে বা কারো অনুভূতিকে লালন ভক্তরা উসকানী দিয়েছে বলে খবর পাইনি। 

আমি ব্যক্তিগত কারণে আর লালনের মাজারে যাইনা , কিন্তু লালনের ফিলোসফীকে আমি পার্সোনালী রেসপেক্ট করি ।  রেসপেক্ট করি বাবা মাইজভান্ডারীর ফিলোসফীকেও । ভান্ডারীর গানগুলো গভীর জীবনবোধ সম্পন্ন , নো ডাউট। 

কোনো ফিলোসফীকে ঘৃণা করার আগে সেই ফিলোসফী স্টাডি করে ডিসিশন নেয়া শ্রেয় । আমি নাস্তিক্যবাদকে ঘৃণা করি আজকে , কিন্তু গ্রাজুয়েশন লাইফে আমি বহু নামকরা নাস্তিকদের সাথে মিশেছি , তাদের ইলাম বিদ্বেষ খুব কাছ থেকে দেখেছি । তাদের বক্তব্যকে কাউন্টার দিতে গিয়ে আমি ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করেছি , হাদিস পড়েছি - নিজ দায়িত্বে , আমার ইসলাম নিয়ে বেশ কিছু আর্টিকেল আছে অনলাইনে । সেগুলো আলেম সমাজ গ্রহণ করেছেন আলহামদুলিল্লাহ । নিজে পড়াশুনা করার পরই আমি নাস্তিকদের তর্ক বিতর্কের শুভঙ্করের ফাঁকিগুলো ধরতে পেরেছি , এবং আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ , আমাকে আমার ধর্মকে স্টাডি করার তাগাদা দেয়ার জন্য। 

আমি ইস্টিশন, সামু, ক্যাফেটেরিয়া সহ বিভিন্ন নাস্তিকগ্রুপ, ভ্লগকে চিরতরে বিদায় জানিয়ে তওবা করেছি। 

আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করছি - বাউল, ভান্ডারী বা যে কোনো ফিলোসফীর মানুষদের রেসপেক্ট করার জন্য, এটাই সহনশীলতা। কাউন্টার তখনই দেবেন যখন আপনার ফিলোসফীকে কেও আঘাত করবে বা করতে আসবে । 

এর আগ পর্যন্ত প্রত্যেক ফিলোসফীকে রেসপেক্ট করাটা মানবিকতা, আপনি তাদের ট্রু ইসলামের দাওয়াত দেন, কবুল করা বা না করা তাদের উপর, হেদায়েত প্রাপ্তিও উপর ওয়ালার নির্দেশে হয়, আপনি জোর করে কাওকে হেদায়েত প্রাপ্ত করতে পারবেন না ।

বি:দ্র:- আমি জানি এই পোস্টে অনেক নেগেটিভ কমেন্ট আসবে , এবং এই লেখার ব্যক্তিগত দায় আমার নিজের।”

নুসরাত

×