ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১

খরা মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমে গেলো প্রবাহ

নিজস্ব সংবাদদাতা লালমনিরহাট 

প্রকাশিত: ১৭:৩৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

খরা মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমে গেলো প্রবাহ

 

খরা মৌসুমে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ২৪ ঘণ্টায় ব্যবধান সেই পানি নেমে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের  ফসল ক্ষতিগ্রস্থের আশঙ্কায়  কৃষকদের চোখে মুখে অন্ধকারের মাঝে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে সেই পানি নেমে যাচ্ছে।

রবিবার সকালের পর থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ কমতে শুরু করে।
রবিবার দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫০ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়। এর আগের সকাল ৭টায় পানির প্রবাহ ছিল ৫০ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার। ডালিয়া পানি উন্নয়ন সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় উজান থেকে ৮০০ কিউসেক পানি তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত তিনদিন পূর্বে তিস্তার পানি ছিল প্রায় ১৫ শত কিউসেক। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ২৩০০ কিউসেক পানি তিস্তার ব্যারাজ পয়েন্টে দেখা দেয়। খরা মৌসুমে হঠাৎ তিস্তার পানি বাড়ায় তিস্তা চরের কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেগে থাকার বালু চরগুলো নিমিষে তলিয়ে যায়। এতে চরের কৃষি আবাদ কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ ঘটনার ২৪ ঘন্টা না পেরুতেই সেই পানি আবার কমতে শুরু করেছে।
 তিস্তার পানি ন্যায্য হিসাব দাবি আদায়ে ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিস্তা নদী রক্ষার ব্যানারে  আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করায় আকস্মিক তিস্তায় পানি বাড়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।

তিস্তা পাড়ের জেলে রহমান আলী বলেন,ওরা মৌসুমে তিস্তায় হঠাৎ পানি দেখে আমরা বেশ আনন্দিত,কিন্তু আবার পানি আবার কমে যাচ্ছে। 
তিস্তা পাড়ের হাবিবুর রহমান বলেন, তিস্তার পানি নিয়ে আমরা আন্দোলন করতে যাচ্ছি ঠিক তখনই ভারত পানি ছাড়ছে। এটা ভারতের চাল। কারণ এই মৌসুমে কখনো ভারত পানি ছাড়ে না।

তিস্তা পাড়ের আকবর আলী বলেন, শনিবার বিকেল থেকে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ এলাকার চরগুলো পানিতে ডুবে যায়। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তা আবার কমতে শুরু করেছে। এতে কিছু কিছু ফসল প্লাবিত হয়েছে। এতে আমাদের কিছু ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম আঙ্গুর বলেন,এতদিন পানির অভাবে তিস্তা মরুভূমি হয়ে যায়,নভেম্বর থেকে তিস্তায় পানি থাকে না  ভারত পানি ছেড়ে দিয়ে তিস্তা পারে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। ভারত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন আমাদের অবস্থান কর্মসূচিতে কোনভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, আমি জানি না ভারত কী উদ্দেশ্যে পানি ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন। আমাদের আন্দোলন থেকে পিছু হটাতে পারবে না। তিস্তা পাড়ের ৫ জেলার মানুষ জেগে উঠেছে।


ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপ অপারেটর নুরুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পানির ছেড়ে দেওয়ায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি হয়,আমরা বিষয়টা আগে থেকে জানতাম না। তিনি আরও জানান, পানিগুলো পরিষ্কার, এগুলো ভারতের রিজার্ভ করে রাখা পানি। ভাটিতে এই পানি তেমন ক্ষতি করবেনা। তবে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা পাড়ের কৃষকরা আশঙ্কায় রয়েছেন। তিস্তার জেগে উঠা বালুচরের তামাক, রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল বাদাম সহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে রবিবার সকাল থেকে পানি প্রবাহ কমে যাচ্ছে।

 

মাহফুজার/সাজিদ

×