ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১

সংবিধানে বহুত্ববাদের সুপারিশে কয়েকটি ইসলামি দলের আপত্তি 

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৩৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সংবিধানে বহুত্ববাদের সুপারিশে কয়েকটি ইসলামি দলের আপত্তি 

শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ হয়।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে বহুত্ববাদের সুপারিশের সমালোচনা করেছে কয়েকটি ইসলামপন্থী দল। তাঁদের দাবি বহুত্ববাদ চলবে না। 

শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের সময় এই আপত্তি জানান তাঁরা। সংবিধান কমিশনের বহুত্ববাদ প্রস্তাব বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুচ আহমাদ বলেন, ‘আমরা একত্ববাদে বিশ্বাসী। এখানে বহুত্ববাদ বা একাধিক স্রষ্টা তো শিরক করা। আইনি দিক হলে অনেক ঝামেলা হবে। তা দরকার ছিল না, আমরা আপত্তি জানিয়েছি।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘বহুত্ববাদের প্রয়োজন নেই আমরা বলেছি। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা হলেই সবার মতামতের সুযোগ হবে। আল্লাহর প্রতি আত্মবিশ্বাস সংযোজন করার জন্য বলেছি।’ হেফাজতে ইসলাম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও আপত্তি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের বহুত্ববাদ আল্লাহর একত্ববাদকে অস্বীকার করা নয়। বহুত্ববাদ বলতে বহুমতের প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। আমরা বলেছি, গণতন্ত্রের বহুমতের প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে।’

নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়ে মান্না বলেন, ‘অনেকে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন তা হতে পারে, কিন্তু এ বিষয়ে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) কোনো মন্তব্য করেননি। কিন্তু তাঁরা বলেছেন যত তাড়াতাড়ি দ্রুত নির্বাচন করতে চান। এ নির্বাচন যাতে ভালো হয়, সে জন্য সংস্কার করবেন। সংস্কার ও নির্বাচন মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে না।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, ‘আমরা প্রথমে প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই। সংখ্যানুপাতিকে নির্বাচন হলে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। প্রশাসনেও আওয়ামী লীগ আছে, তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে।’ গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী বলেন, সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনেক ভিন্নতা রয়েছে। ভিন্নতা নিয়েও একসঙ্গে চলতে চাই।

সংস্কার বাস্তবায়ন প্রস্তাবের বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বলেছি সংবিধান সংস্কার সভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা টেকসই ব্যবস্থা হিসেবে যাতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এ সংস্কার। সেদিকে সরকার ও সব পক্ষ বিবেচনায় নেয়, সেই আহ্বান করেছি।’

নির্বাচনকে সংস্কার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে সাকি বলেন, ‘সংস্কার যেমন নির্বাচনের জন্য দরকার, তেমনি আবার সংস্কার শেষ করার জন্য নির্বাচন লাগবে। তাই একে বিরোধ হিসেবে না দেখে আগামী নির্বাচনকে সংস্কার শেষে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা। পরবর্তী সংসদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে।’

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘আমরা সংস্কারও চাই, আবার যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনও চাই। আমরা স্পষ্ট বলেছি, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চাই।’

শহীদ

×