ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১

আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ

দিয়াবাড়িতে বিআরটিএ ভবনে পেট্রোল বোমা অগ্নিসংযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দিয়াবাড়িতে বিআরটিএ ভবনে পেট্রোল বোমা অগ্নিসংযোগ

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মেট্রো সার্কেল তিন ভবনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানী উত্তরা দিয়াবাাড়ি এলাকায় বিআরটিএ ভবনে দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও বিদ্যুতের লাইনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে বিআরটির চেয়ারম্যানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় দুটি পেট্রোল বোমাসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। 
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়Ñ চারতলা ভবনের নিচ তলা বিদ্যুতের তারে আগুন লাগানো হয়েছে। এ ছড়া ওই ভবনে সাইন বোর্ড লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা মারা হলে, সেটি বাড়ি খেয়ে ভবনটির গেটের সামনে পড়ে যায়। অন্যদিকে দোতলা একটি ভবনের পেছনের সাইটে পেট্রোল বোমা মারা হয়। কিন্তু দেওয়ালের সঙ্গে বাড়ি খেয়ে সেটি একটি ভবনের টিনের চালে পেট্রোল বোমাটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

সেখানে দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য রমেশ চন্দ্র জনকণ্ঠকে বলেন, রাত আডাইটার দিকে কে বা কারা বিআরটিএর এক নম্বর ভবনে নিচের গেটের ও দোতলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি দেখতে পেয়ে চিল্লাচিলি করে আমাদের অন্য সাথীদের ডেকে তুলি। তাদের নিয়ে আসি। ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড আগুন নেভানোর যন্ত্র নিয়ে আসে।

তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে আগুন নেভানো হয়। কিন্তু দোতলায় আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের লোকজন নিয়ে আসি। তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে সেখানে থাকা ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, আমি ব্যাংকের বুথের ভেতর ছিলাম। হঠাৎ রাস্তায় আগুন দেখতে পাই।

বের হয়ে দেখি একটি মোটরসাইকেলের দুজন ব্যক্তি হেলমেট পরা। তারা বিআরটিএর পূর্ব পাশের রাস্তা দিয়ে হোন্ডাটি সজোরে চালিয়ে চলে যায়। তাড়াহুড়া করে বুথ থেকে আগুন নেভানোর স্প্রে নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। 
এ বিষয়ে সিসিটিভি ফুটেছে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে অফিসের পূর্ব পাশে একটি মোটরসাইকেলযোগে তিনজন লোক আসে। তারা সেখানে একটি সডকে অবস্থান করে। ঠিক পাঁচ মিনিট পর সেখান থেকে দুজন বেরিয়ে কথা বলতে বলতে বিআরটিএর ভবনের পশ্চিম পাশে চলে যায়। তার কিছুক্ষণ পর সেই একই সডক থেকে দুজন হুডি পরা চেহারা ঢেকে ভবনের সামনে আসে।

এর ভেতরে মোটরসাইকেল আরোহী ওই সড়ক থেকে মোটরসাইকেলটি ঘুরিয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে একজন বিআরটিএর কেচি গেটের সামনে যান অন্য দুজন একটির ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পর কেচি গেট দাঁডানো সে ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সঙ্গে এসে দেখা করেন তখন দুইটা পঁচিশ বাজে। আগুন ধরিয়ে বিআরটির ভাবন লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে ভবনের পূর্ব পাশ সড়ক দিয়ে হেঁটে চলে যায়।

ঘটনার পর বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন শুক্রবার বেলা ১২টায় ভবনটি পরিদর্শন করেন। তিনি সে সময় বলেন, এটা অবশ্যই নাশকতামূলক কাজ। নিশ্চয়ই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্যই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। বিল্ডিংকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমাগুলো নিক্ষেপ করা হয়। এটি প্রাইভেট বিল্ডিং হলেও পুরো ভবনটি সরকারি অফিস নিশ্চয়ই উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

ক্ষতিপূরণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এখনো বলা যাবে না। যদিও সরাসরি তেমন কোনো ক্ষতির চিহ্ন দেখা যায়নি। তবুও কিছু তার এবং সিসি ক্যামেরাসহ অনেক কিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাহাৎ খান বলেন, খবর পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিআরটিএ অফিসে যাই। সেখানে গিয়ে কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। আশপাশের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল। যদিও আপনারা জানেন অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযান চলমান রয়েছে।

×