ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

হাসিনার পতনে আসলেই হাত ছিল আমেরিকার!

প্রকাশিত: ২১:২৫, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২১:৪২, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হাসিনার পতনে আসলেই হাত ছিল আমেরিকার!

একটি অনলাইন সংবাদপত্রের প্রকাশিত গোপন নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য মার্কিন সরকার সক্রিয়ভাবে পরিকল্পনা করে আসছিল। ‘দ্য গ্রেট জোন’ নামের সংবাদপত্রটি জানায়, শেখ হাসিনার সরকার পতনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ‘ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট’ (আইআরআই)-এর মাধ্যমে গোপনে বিশাল কর্মীবাহিনী গঠন করে। এই ষড়যন্ত্রের আওতায় বিভিন্ন শ্রেণির কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যার মধ্যে র‍্যাপার, এলজিবিটিকিউ কর্মী এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত ছিল।


ফাঁস হওয়া নথিতে উল্লেখ রয়েছে যে, সরকারবিরোধী আন্দোলন উসকে দিতে সাংস্কৃতিক কৌশল ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়। আন্দোলনকে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও তরুণদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে গণজমায়েত, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং এমনকি হিজড়াদের নাচের পারফরম্যান্সের মতো কর্মসূচিও আয়োজন করা হয়।


আইআরআই-এর মিশন ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ক্রমাগত অস্থিতিশীল করে তোলা এবং বিদ্যমান সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা। নথিতে বলা হয়, “এই পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করা এবং তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য একটি সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করা।”


প্রকাশিত নথি অনুযায়ী, প্রথমদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা করেছিল, তবে তারা দ্রুত বুঝতে পারে যে বিএনপির জনসমর্থন নেই এবং দলটি রাজনৈতিকভাবে অযোগ্য।নথিতে আরও বলা হয়, “বিএনপি ছিল মার্কিন সরকারের প্রথম পছন্দ, তবে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং জনগণের স্বল্প সমর্থনের কারণে এই পরিকল্পনা সফল হয়নি।”এরপর যুক্তরাষ্ট্র তাদের কৌশল পরিবর্তন করে তরুণদের টার্গেট করে এবং সামাজিকভাবে তাদের মাধ্যমে সরকারবিরোধী বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেয়।


ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে।এই পরিকল্পনার অধীনে বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের গোপনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়,তরুণদের মাধ্যমে সরকারবিরোধী বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়,বিদেশি মিডিয়ার নজর আকর্ষণ করতে বিক্ষোভের বিভিন্ন স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হয়।


নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ‘প্রতিবাদী শিল্পী’ ও সৃজনশীল কর্মীদের মাধ্যমে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে জনপ্রিয় করে তোলে।নথি অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীদের কার্যক্রম ভিডিও আকারে রেকর্ড করে তা দ্রুত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।


এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য ছিল-বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটকে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত করা,পশ্চিমা মিডিয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নেগেটিভ প্রচারণা চালানো এবং সরকারবিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালানো।


নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী বিএনপির জনপ্রিয়তা এতটাই কম ছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন ছাড়া তারা ক্ষমতায় আসতে পারত না।


প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়,বিএনপির জনপ্রিয়তার অভাব, নেতৃত্বের অযোগ্যতা এবং সাংগঠনিক দুর্বলতা যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। বিএনপি সহিংসতা ও নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা করলেও জনগণের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে।তাই যুক্তরাষ্ট্র তাদের মূল কৌশল পরিবর্তন করে তরুণদের মাধ্যমে সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরি করতে শুরু করে এবং শিল্পীদের ব্যবহার করে আন্দোলনকে আরও গতিশীল করে।


সূত্র:https://tinyurl.com/3jmxx73w
 

আফরোজা

×