ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

জুলাইতে ১৪০০ জন নিহত হয়েছেন, যার ১২ শতাংশই শিশু? জাতিসংঘের প্রতিবেদন কী বলছে?

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০৮:৪৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জুলাইতে ১৪০০ জন নিহত হয়েছেন, যার ১২ শতাংশই শিশু? জাতিসংঘের প্রতিবেদন কী বলছে?

ছবিঃ সংগৃহীত

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন (OHCHR) সম্প্রতি একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ এই লঙ্ঘনগুলোর সাথে জড়িত ছিলেন।

অস্ত্র সরবরাহ ও সহিংসতার অভিযোগ
OHCHR-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ পুলিশ ৯৫ জন ব্যক্তির নাম ও পরিচয় সংস্থাটিকে সরবরাহ করেছে। এদের মধ্যে ছিলেন—

১০ জন তৎকালীন সংসদ সদস্য
১৪ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা
১৬ জন যুবলীগ নেতা
১৬ জন ছাত্রলীগ নেতা
৭ জন পুলিশ সদস্য
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা বিক্ষোভের সময় সাধারণ নাগরিকদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন এবং সহিংস আক্রমণে উৎসাহিত করেছিলেন। একইসাথে, ১৬০ জন আওয়ামী লীগ-সম্পর্কিত রাজনৈতিক নেতা এবং নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তার নামও দেওয়া হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার উসকানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বিক্ষোভ দমনে সহিংসতার অভিযোগ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়কালে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল। নিহতদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রায় ১১,৭০০ জনকে আটক করা হয়েছে, এবং অনেক বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ বা তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুদণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জাতিসংঘের সুপারিশ ও সরকারের প্রতিক্রিয়া
OHCHR এই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসাথে, নিরাপত্তা ও বিচার খাতে সংস্কার, সাক্ষী সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস, এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আইনের শাসন বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ, প্রসিকিউটর এবং বিচারকদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
OHCHR-এর এই প্রতিবেদনের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও কূটনীতিকরা এই বিষয়ে কঠোর তদন্ত ও দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তুলেছেন।

তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/p/1HFywuQXSo/

মারিয়া

আরো পড়ুন  

×