ছবিঃ সংগৃহীত
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও সমালোচক জাফরান হাসান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আয়নাঘরের নির্যাতনের তালিকা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ঘটনাগুলো আমি নিজ কানে সরাসরি বন্দিদের থেকে শুনেছি। সুতরাং এই ঘটনার সোর্স নিয়ে কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়।
১) হাতলওয়ালা কাঠের চেয়ারে বসিয়ে মেটালের বেল্টের মাধ্যমে হাত পা ও মাথা আটকে দিয়ে হাই ভোল্টেজ ইলেক্ট্রিক শক দেওয়া হতো। কিছু আয়নাঘরে লোহার তৈরি চেয়ারও আছে/ছিলো যেগুলো দিয়ে সারাশরীরে প্রচন্ড শেইক/শক দেওয়া হতো। এই চেয়ারের বেশিরভাগ বন্দিই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।
২) প্লাস্টিকের একটি চেয়ারের নিচের অংশ ছিদ্র করে রাখা হতো। এই চেয়ারে বন্দিকে বসিয়ে অন্ডকোষে সূক্ষ্ম সূতা পেঁচিয়ে চেয়ারের ছিদ্র দিয়ে নিচের দিকে টান দেওয়া হতো।
৩) মেঝে থেকে আনুমানিক ৮/৯ ফুট উচ্চতায় ঝুলন্ত লোহার বার বা সেলিং-এ ফ্যানের হুকের সাথে উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানো হতো।
৪) জানালা অথবা দেয়ালে লাগানো হুকের সাথে বন্দির হাত এমনভাবে হ্যান্ডকাফ/শিকল দিয়ে বেধে রাখা হতো যেন মেঝেতে কোনমত পায়ের আঙ্গুল স্পর্শ করে, কিন্তু পুরোপুরি দাঁড়ানো সম্ভব না হয়।
৫) মেঝেতে পা ছুঁইছুঁই করে দুই হাত উপরে তুলে ঝুলিয়ে বন্দিকে ঝুলিয়ে রাখতো, নিচে পেরেকযুক্ত কাঠ ফেলে রাখা হতো। অনেক বন্দি নিজের ভার সইতে না পেরে পায়ে পেরেক বিধে ফেলতো।
৬) বিশেষ প্লায়ার্স ব্যবহার করে বন্দির হাত ও পায়ের নখ কাঁচা টেনে উপড়ে ফেলা হতো।
৭) বন্দির হাত ও পায়ের নখের অগ্রভাবে সূচালো ক্ষুদ্র সূচ ফুটিয়ে নির্যাতন করা হতো।
৮) পা মুড়িয়ে হাতের ভেতর দিয়ে লাঠির সাহায্যে আটকে রাখা হতো, হাত হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে রাখা হতো।
৯) ২৪/৭ বন্দির হাতে হ্যান্ডকাফ থাকতো, ফলে অনেকের হাতের চামড়া কেটে হ্যান্ডকাফ ঢুকে যেত।
১০) ঘুমের সময় অনেক বন্দির হাত পেছনমোড়া করা রাখা হতো। বন্দিদের বুকের উপর ভর করে ঘুমাতে বাধ্য করা হতো।
১১) অনেক বন্দিকে শুয়ে ঘুমানোর অনুমতি ছিলোনা। দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে সারারাত শুয়ে থাকতে হতো।
১২) লাঠির অগ্রভাগ দিয়ে বন্দির শরীরের স্পর্শকাতর স্থান, লজ্জাস্থানে আঘাত করা হতো।
১৩) হুট করে বন্দির দুই কান বরাবর সজোরে চড় দিয়ে বন্দির কান ফেটে দিতো।
১৪) বন্দিকে মেঝেতে শুইয়ে শরীরের উপর দিয়ে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে রোল করে মাড়াই করতো।
১৫) বন্দিকে প্রসাব করতে দিতোনা, জরুরী প্রকৃতির ডাক আটকে রাখতে বাধ্য করতো।
১৬) বন্দির অন্ডকোষ সজোরে চাপ দিতো। এতে অনেক বন্দি ব্যথা সহ্য না করতে পেরে অজ্ঞান হয়ে যেত।
১৭) লজ্জাস্থানের প্রসাবের স্থান দিয়ে প্লাস্টিকের রয়্যাল প্লাগ ঢুকিয়ে দিয়েই প্লায়ার্স দিয়ে চাপ দেওয়া হতো। বন্দির প্রসাবের স্থান কেটে গিয়ে রক্ত পড়তো।
১৮) নারী ও পুরুষ উভয় বন্দিদের অনেককে ধর্ষণ করা হতো। বন্দিদের চোখ বেধে রেখে তার মুখে অফিসাররা গোপনাঙ্গ প্রবেশ করিয়ে দিতো।
১৯) অনেক বন্দিদের শরীরে বীর্যপাত করতো। এমনকি পুরুষ বন্দিদের সাথেও এমন আচরন করত।
২০) পুরুষ বন্দিদের সামনে স্ত্রী-কন্যাকে উলঙ্গ করে একাধিক র্যাব সদস্য ঝাঁপিয়ে পড়তো।
রিফাত