ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

হাসিনা যখন ইলিয়াসের মেয়ের মাথায় হাত রেখেছিলো, তখন জানতো মেয়েটার বাবাকে সে নিজেই হত্যা করিয়েছিলো

প্রকাশিত: ২২:৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২২:৩২, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হাসিনা যখন ইলিয়াসের মেয়ের মাথায় হাত রেখেছিলো, তখন জানতো মেয়েটার বাবাকে সে নিজেই হত্যা করিয়েছিলো

ছবিঃ সংগৃহীত

অ্যাক্টিভিস্ট ও সমালোচক ফাহাম আব্দুস সালাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে সেনা প্রধাঙ্কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ওয়াকার সাহেব, আপনার সাথে যুক্ত হওয়ার উপায় নেই দেখে লিখছি। আশা করছি কোনো সহৃদয় ব্যক্তি আপনাকে লেখাটা পৌঁছে দেবে। 

আপনি দেখেছেন আয়নাঘরে জুলুমের মাত্রা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিলো। ধরে নিচ্ছি যে ৫ই অগাস্টের আগে আপনি তা জানতেন না। কিন্তু এখন আপনি জানেন যে মিলিটারি অফিসাররা জানোয়ারের চেয়ে নীচে নেমে নিরীহ মানুষদের ওপর কোন ধরনের বর্বর অত্যাচার করেছিলো। আপনার বাহিনীর লেঃ কর্নেল রেদোয়ান সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছিলো। সে এখনো চাকরি করছে।  

আমি বুঝি যে আপনার ওপর অসহনীয় চাপ আছে। নিজের ফোর্সকে রক্ষা করবেন না ন্যায়ের পক্ষে যাবেন। এই দোটানায় আপনার জীবন বিপন্ন।  

আমি অনুরোধ করবো আপনি ন্যায়ের পক্ষে যান। আমি অনুরোধ করবো আপনি মিলিটারি চীফ না; তুলির মতো করে চিন্তা করবেন।  আরমানের মেয়ে হিসেবে চিন্তা করবেন। ইলিয়াস আলীর সন্তানের মতো করে চিন্তা করবেন। ইয়েস, আপনি আমার মতো একজন বাবা হিসাবেও চিন্তা করবেন। আমাদের এই সন্তানদের জীবন ধ্বংস করেছে আপনার বাহিনীর অফিসাররা। শুধু বিচারই তাদের জন্য অবশিষ্ট আছে। 

এখনো তারা গুম কমিশনকে অসহযোগিতা করছে। এখনো তারা প্রসিকিউটারদের অসহযোগিতা করছে। আপনি জানেন কিনা জানি না - উত্তরা র‍্যাব অফিস পরিদর্শনকালে লাইভ বম ডেটোনেট করা হয়েছিলো। তারা শুধু আলামত নষ্ট করে নাই, প্রসিকিউটারদের হত্যা করার চেষ্টাও করেছিলো।  

বাংলাদেশের একজন সাধারণ পিতা হিসাবে আপনার কাছে আমার অনুরোধ: প্রসিকিউশান টিমকে আপনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। সাহায্য চাওয়ার আগেই ব্ল্যাঙ্ক চেক দেবেন। সৈনিক থেকে জেনরেল যেই দোষী হোক, আপনি তাদের আইনের আওতায় আনুন।  

প্রসিকিউশান টিম তাদের জীবন বাজি রেখে ন্যায়ের জন্য লড়ছে। আপনি তাদের হাতকে প্রসারিত করুন। সর্বোপরি আল্লাহর বিচারকে ভয় করুন।   

এই পৃথিবীতে মুসলমান যখন বিচার করে তখন সে স্বয়ং খোদার প্রতিনিধিত্ব করে। এর গুরুত্ব অনুধাবন করুন। এমন যেন না হয় যে আপনি আপনার ফোর্সকে বাঁচাতে গিয়ে স্বয়ং খোদার দায়িত্ব খারিজ করে দিলেন। 

আমি-আপনি কেউই কালকে থাকবো না। আমাদের সন্তানরা থাকবে। তাদের জন্যে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হতে দিন। এই সুযোগ ক'জন মানুষ জীবনে পায়?

বাংলাদেশের এই দুর্যোগকালে আপনি ন্যায়ের পক্ষ নেবেন, আমি এই আশা করি। আমরা এই আশা করি। ডিজিএফআই এর খুনী অফিসারদের আপনি বিচারের সম্মুখীন করেন। তদন্তে সব সহযোগিতা করবেন। 
 
আয়নাঘর থেকে যারা ফিরে নাই, তাদের সন্তানদের দিকে তাকান। আপনি আপনার ফোর্সকে কেবল তখনই বাঁচাতে পারবেন, যখন ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। 

যখন আপনি সত্যের পক্ষে দাঁড়াবেন, কেবল তখনই আপনি ভারমুক্ত হবেন। 

একটা অনুরোধ: আপনার অফিসে ইলিয়াস আলীর সন্তানের ছবি টাঙিয়েন। শেখ হাসিনা যখন ইলিয়াস আলীর মেয়ের মাথায় হাত রেখেছিলো, তখন সে জানতো যে এই মেয়েটার বাবাকে সে নিজেই হত্যা করিয়েছিলো। 

আমি আশা করি আপনি পারবেন একজন বাবা হতে।

রিফাত

×