ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

শীর্ষ সম্মেলনে যাবেন ড. ইউনূস

বিমসটেক সভাপতি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিমসটেক সভাপতি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে বলেছেন, সার্ক ও বিমসটেকের সঙ্গে কোনো পারস্পরিক দ্বন্দ্ব নেই। সদস্যদেশগুলোর অগ্রাধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে বিমসটেক সহযোগিতা পাচ্ছে বলেও জানান তিনি। আগামীতেও বাংলাদেশ সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।  
মঙ্গলবার বিমসটেক অফিসে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ-ডিকাব’র সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সার্ককে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান  জানান। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ফোকাস বিএমসটেক থেকে  সরে আসতে পারে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিমসটেক মহাসচিব বলেন, সার্ক ও বিমসটেক দুটিই আঞ্চলিক সংস্থা। এই দুই সংস্থার সঙ্গে কোনো  পারস্পরিক দ্বন্দ্ব নেই। একই দেশ একাধিক ফোরামে থেকে কাজ করতে পারে। একাধিক  দেশ  সার্ক ও বিমসটেকের সদস্য, আবার কেউ কেউ আসিয়ানের সদস্য। এই ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। সব সংস্থার লক্ষ্য দেশকে এগিয়ে নেওয়া। একাধিক প্লাটফরমে থেকে সেটি করা সম্ভব। তিনি আরও জানান, আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিএমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে। 
আশা করছি, বাংলাদেশের  নেতৃত্বে বিভিন্ন ইস্যুতে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মহাসচিব বলেন, আগামী ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডে বিমসটেক সামিট হবে।  সেখানে সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ নেতারা যোগদানে সম্মত হয়েছেন। তবে সাইড লাইনে শীর্ষ নেতাদের একে অপরের সঙ্গে বৈঠক সে দেশগুলো পারস্পরিক আলোচনা করে ঠিক করবে।

সেই হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত না হলেও প্রধান উপদেষ্টার ব্যাংককে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, এখনো বেশ কিছুটা সময় বাকি আছে। কোনো কিছু চূড়ান্তভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা যোগ দেবেন, এটা নিশ্চিত।
মোদি-ইউনূস বৈঠক হতে পারে ॥ এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বরে বিমসটেক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু থাইল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে স্থগিত হয়ে যায়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে থাইল্যান্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। সেসময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হতে পারে।
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত হওয়ার পর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ড. ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে প্রায় একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলেও মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি ড. ইউনূসের। তখন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, মূলত এ দুই নেতা একই সময়ে নিউইয়র্কে উপস্থিত না থাকার কারণে তাদের সাক্ষাৎ হবে না।
বিমসটেক মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে দাবি করেন, কোনোভাবেই বিমসটেক চীন বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো প্লাটফর্ম নয়। আগামী শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিমসটেক সভাপতি হতে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে বিমসটেক মহাসচিব জানান, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে বিমসটেককে শক্তিশালী করতে কাজ করছে।

সে অনুযায়ী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার থেকে বিমসটেকে আমরা যথাযথ সহযোগিতা পাচ্ছি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকেও আমরা সম্মান করি। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিকাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন,  সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুনসহ সদস্যবৃন্দ।

×