ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার ॥ উপদেষ্টা আসিফ মা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার ॥ উপদেষ্টা আসিফ মা

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ উদ্বোধন করেন

অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের মধ্যে যে কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তা বাস্তবায়নে এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সে পর্যন্ত জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের মাঠে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্যে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান এই জাতিকে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রস্তাবনা পেশ করেছে, স্টেকহোল্ডার কনসালটেশনের মাধ্যমে সেই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র কাঠামোর যে অঙ্গগুলো বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে সেগুলোকে পুনর্গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথে অগ্রসর হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার ও বিচারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এবং সুষ্ঠু ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের যেই দায়িত্ব নিয়েছে সেটি বাস্তবায়নে দেশবাসীর কাছে সাহায্য প্রত্যাশা রেখে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, একটি রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে ধৈর্য ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে, যেখানে বড় কোনো ধরনের রক্তপাত হয়নি।

মানুষ আইন ও বিচারের প্রতি যে শ্রদ্ধা দেখিয়েছে সেখান থেকে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি এবং ভরসা পাই এদেশের মানুষ ধৈর্য ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই গণঅভ্যুত্থানের যে ফসল দেশের মানুষ পেতে চায় তা বাস্তবায়নের সহযোগিতা করবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণরা দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছে, দেশ পুনর্গঠনে একইভাবে এগিয়ে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এদেশের তরুণ সমাজ জাতি ও দেশকে একটি নতুন স্বপ্ন দেখার একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। সেটি সফল করতে এই তরুণ সমাজের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।

আমি বিশ্বাস করি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণ সমাজ দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছে, দেশ পুনর্গঠনে একইভাবে এগিয়ে আসবে এবং প্রত্যেকটি সেক্টরে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দেবে। সেই সঙ্গে আধুনিক বিশ্বে প্রতিযোগিতার সঙ্গে টিকে থাকার জন্য তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, তারুণ্য শুধু বয়সের বিষয় নয়। এটি একটি মানসিক অবস্থান। সকল বয়সের মানুষকেই তারুণ্য ধারণ করতে হবে। তারুণ্যের একটি সর্বজনীন রূপ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারুণ্যের শক্তি সকলের মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টি করে।

তরুণ ছাত্র-সমাজের সঙ্গে এদেশের তরুণ রিক্সাচালক, তরুণ কৃষক, তরুণ সবজি বিক্রেতাসহ সকল শ্রেণিপেশার তরুণ ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই আন্দোলনে শামিল হয়। সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ায়। ফলে একটি সফল গণঅভ্যুত্থান সম্ভব হয়। তারুণ্যের এই উৎসব জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সম্মান জানানোর একটি উপলক্ষ্য হিসেবে আমরা দেখতে পারি।
উপাচার্য আরও বলেন, দীর্ঘদিনের দলান্ধ, হিংস্র ও বিভাজনের রাজনীতি এদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এতে দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সামাজিক বিভেদ দূর করে মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টিতে এ ধরনের উৎসব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ৩ দিনব্যাপী ওই তারুণ্যের উৎসবে আয়োজনে থাকছে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, তরুণ উদ্যোক্তাদের স্টল পরিদর্শন, ক্লিন ক্যাম্পেইন বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুরুষ ইভেন্টে থাকছে বস্তা দৌড়, দাবা, মোরগ লড়াই, বেলুন ফুটানো, সাত চাড়া, রশি টানাটানি এবং নারী ইভেন্টে হাঁড়ি ভাঙা, দাবা, বউচি, স্কিপিং, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপ, মিউজিক্যাল পিলো পাসিং, এবং প্রীতিফুটবল ম্যাচ।

এ ছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে গান, নৃত্য এবং কবিতা আবৃত্তি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক দল), গম্ভীরা (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), ফোক গানের (লালনগীতি, হাসন রাজার গান, ইত্যাদি) আয়োজন করা হয়।

×