ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

সাংবাদিকদের আসিফ নজরুল

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু মামলার রায় অক্টোবরের মধ্যে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু মামলার রায় অক্টোবরের মধ্যে

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু মামলার রায় অক্টোবরে

জুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে তিন-চারটির রায় অক্টোবরের মধ্যেই পাওয়া যাবে। এমন আশা প্রকাশ করেছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এ আশাবাদের কথা জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এসব মামলায় শেখ হাসিনা এবং পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও আসামি। ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ৩০০টির বেশি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি মামলার তদন্ত  চলছে, যার মধ্যে ৩-৪টির তদন্ত চলতি মাসেই শেষ হবে। এই ৩-৪টি মামলার পরবর্তী বিচারিক কাজ শেষ হতে আগামী অক্টোবর মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, জুলাই হত্যাকা-ের যে বিচার, সেই বিচারের অগ্রগতি কী হয়েছে, সেটা জানতে চান অনেকে। একটি কমন (সাধারণ) অভিযোগ হলো, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জুলাই হত্যাকা- সংক্রান্ত যে মামলাগুলো হয়েছে, সেগুলোর দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এ ধরনের অসন্তুষ্টির কথা অনেকে বলেন। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর এরইমধ্যে এ আদালতে বিচারের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। 
তিনি বলেন, আদালত পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করেছেন চার মাস আগে। এরমধ্যে আদালতে ৩০০টির বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমাদের প্রসিকিউশন টিম যাচাই-বাছাই করে ১৬টি মামলা দায়ের করেছে আনুষ্ঠানিকভাবে। এই ১৬টি মামলার মধ্যে চারটির তদন্ত কাজ এ মাসের মধ্যেই শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি। এরপর চার্জশিট গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কাজ শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, বিচার শুরু হওয়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী তিন সপ্তাহ সময় প্রস্তুতির জন্য ডিফেন্স আইনজীবীদের দিতে হয়। আমরা আশা করছি, এই তিন সপ্তাহ সময় অতিবাহিত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষ্যগ্রহণের যে প্রক্রিয়া, সেটি আপনারা খুব ঘন ঘন দেখবেন। এই সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে ঈদের পর এপ্রিল মাসে।
আসিফ নজরুল বলেন, আদালতে (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) অব্যাহতভাবে শুনানি হয় বলে, সব মামলার রায় পরবর্তী চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে শুরু করে পরবর্তী চার থেকে ছয় মাসের মধ্যে হবে বলে আশা করি। সেই হিসাবে অক্টোবরের মধ্যে তিন থেকে চারটি মামলার রায় পেতে যাচ্ছি বলে আশা রয়েছে। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের  শীর্ষ নেতা এবং শীর্ষস্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আসামি। 
তিনি বলেন, ‘যদি পুরো বিচারকার্যটা ধরি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এক বছরের মতো সময় লাগছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শেখ হাসিনার আমলে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির একজন নেতার বিচার হয়। সেই বিচারকাজ শেষ করতে গড়ে কমপক্ষে আড়াই বছর লেগেছিল। এখানে আমাদের এই আদালতে অর্ধেকেরও কম সময় লাগছে।’
সময় কম লাগার কারণ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের প্রসিকিউশন টিম, তদন্ত টিম প্রচ- নিষ্ঠার সঙ্গে দিনরাত কাজ করছেন। নিয়মিত খবর রাখছি। এ বিচারকার্যগুলো আরেকটু তাড়াতাড়ি  হওয়ার  আরেকটি কারণ হচ্ছে, বিচারগুলো হয়েছে অনেক দিনের আগের ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে। এখন যে বিচার হচ্ছে এটার সাক্ষ্য প্রমাণ এত বেশি আছে, যে কারণে আমরা আশা করছি এক বছরের মধ্যেই আমরা প্রথম  কযেকটি রায় পাব। আগামী দু-একদিনের মধ্যে জাতিসংঘের তদন্ত টিমের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এই রিপোর্টের ব্যাপারে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলব না। তবে একটা জিনিস বলে রাখি, তাদের এই রিপোর্ট আমাদের তদন্ত কাজটাকে, বিচারকাজটাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য পাশাপাশি স্বচ্ছ ও সহজ করতে অনেক অবদান রাখবে।’

×