![গাফিলতি পেলেই হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল, জরিমানা গাফিলতি পেলেই হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল, জরিমানা](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/b7-2502101845.jpg)
ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন
হজযাত্রায় এজেন্সির গাফিলতি থাকলেই লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সির অবহেলা বা গাফিলতির কারণে কোনো হজযাত্রী হজ করতে না পারলে তার দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। এ দায় কোনোভাবেই সৌদি সরকার কিংবা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বহন করবে না।
এজেন্সির অবহেলায় কোনো হজযাত্রী হজ করতে না পারলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবেÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল তো হবেই। আর্থিক জরিমানাও করা হবে।
তিনি বলেন, হজ ও ওমরাহ বিধিমালা ২০২২-এ সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়া করার লক্ষ্যে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি রয়েছে। এ কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারে। এবছর এই কমিটিতে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দুজন ও জেদ্দা কনস্যুলেটের দুজন প্রতিনিধি কো-অপ্ট করা হয়। এদের মধ্যে সৌদি দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশে ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিও ছিলেন।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, এরূপ শক্তিশালী একটি কমিটি এবছর সরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়ার কাজটি সম্পন্ন করেছে। এই কমিটি বাড়িভাড়া কোটেশনের পরিপ্রেক্ষিতে দরদাতাদের বাড়িগুলো পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেছে। প্রাথমিকভাবে বাছাই করা বাড়িগুলো দুই বা ততোধিকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে।
তিনি বলেন, বাড়িগুলোর মান, আনুষঙ্গিক সুবিধা, হারাম শরীফ হতে দূরত্ব, হজ প্যাকেজে প্রতিশ্রুত সেবা ও বাড়িভাড়া বাবদ বরাদ্দ- এসব বিষয় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এই কমিটি সর্বোত্তম বাড়িগুলো ভাড়া করেছে এবং বাড়িভাড়া চুক্তিও সম্পাদন করেছে। এ কমিটি বিধি মোতাবেক বাড়িভাড়া করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য সর্বান্তকরণে চেষ্টা করেছে।
উপদেষ্টা বলেন, এবছর সরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীদের জন্য আমরা দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলাম। সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এ নিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য মক্কায় আমরা হারাম শরীফের বহির্চত্বর থেকে তিন কিলোমিটারের (কিমি) মধ্যে আবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সৌদি সরকারের বিধান অনুসারে হারাম শরীফ হতে দুই কিলোমিটার দূরে হজযাত্রীদের জন্য হোটেল বা বাসা ভাড়া করা হলে সেক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে পরিবহনের বন্দোবস্ত রাখতে হয়। আমরা এ উদ্দেশ্যে হজযাত্রীপ্রতি ৩০০ রিয়াল ধরেই প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছিলাম।
কিন্তু বাস্তবতা হলো- হজের মৌসুমে অত্যধিক ভিড়ের কারণে অনেক সময় হারাম শরীফ হতে দেড় থেকে দুই কিমির মধ্যে বাস প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এ কারণে আমরা হজযাত্রীদের সুবিধার্থে প্যাকেজ-১ এর বাড়িভাড়া ও পরিবহন বাবদ দেয় টাকা সমন্বয় করে এই প্যাকেজের যাত্রীদের জন্য তিন কিমির স্থলে দুই কিমিরও কম দূরত্বে বাড়িভাড়া নিয়েছি।
আমরা তাদের জন্য যে বাড়িগুলো ভাড়া নিয়েছি, তার সর্বোচ্চ দূরত্ব হবে এক দশমিক ৬ কিমি। বাড়িভাড়া কমিটির সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে সরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীদের কষ্ট লাঘব হবে এবং হজযাত্রী হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বহুলাংশে কমে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীদের জন্য মক্কায় যে সব হোটেল ভাড়া করেছি, সেগুলোর সর্বোচ্চ দূরত্ব হবে এক দশমিক দুই কিমি।
অন্যদিকে, মদিনায় হজ প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীদের জন্য সর্বোচ্চ এক কিমির মধ্যে এবং হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীদের জন্য ৩০০-৬০০ মিটারের মধ্যে হোটেল ভাড়া করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, হজ প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীরা মিনায় জোন-৫ এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীরা মিনায় জোন-২ এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সেখানে খাবারসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
তিনি বলেন, হজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবা বিশেষ করে পরিবহন সেবা, লাগেজ লোডিং-আনলোডিংসহ অন্যান্য সেবার জন্য সৌদি সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ইতোমধ্যে সব চুক্তি সম্পাদন করেছি। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বিশ্বস্ত হজসেবা প্রদানকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছি।
আশা করি, এবছর আমাদের হজযাত্রীগণ সন্তোষজনক সেবা পাবেন। আমরা ইতোমধ্যে সৌদি সরকারের চাহিদামাফিক হজযাত্রীপ্রতি এক লাখ ৫৭ হাজার ৩৯১ টাকা হিসেবে এক হাজার ২৮৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল পাঠিয়েছি।