ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

এবারের বৈশাখে ইলিশ ও ছায়ানট-উদীচীর কর্পোরেট বাঙ্গালি বাণিজ্য থাকবে না

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২২:২৫, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এবারের বৈশাখে ইলিশ ও ছায়ানট-উদীচীর কর্পোরেট বাঙ্গালি বাণিজ্য থাকবে না

ছবিঃ সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক স্ট্যাটাসে বৈশাখ উদযাপন করার প্রস্তুতি নিয়ে জানানো হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়েছে, ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে এবার একটা সত্যিকারের বাংলাদেশি বৈশাখ উদযাপন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। এতে ইলিশ-গরু কিছুই থাকবে না। সকালে ইলিশ বা গরু দিয়া পান্তা খেয়ে মাঠে যাওয়ার সঙ্গতি বাংলাদেশের কৃষকের কোনোকালেই ছিলো না। আরবান মিডেল ক্লাস ও ছায়ানট-উদীচীদের চাপিয়ে দেয়া কর্পোরেট বাঙ্গালি বাণিজ্যের বিপরীতে আমরা বাংলার আপামর কৃষক-শ্রমিক-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বৈশাখ উদযাপন করতে চাই।

সকালে শাহবাগে আলু ভর্তা ও পেঁয়াজ-মরিচ ভর্তা দিয়া পান্তা খাবো সবাই। গরম ভাতে পানি ঢাইলা বানানো পান্তা না এইটা। সাথে থাকবে নারিকেল, গুড় ও কাঠালি কলা। শত বছর ধরে বাংলার কৃষকেরা যেভাবে খায় আর কি। থাকবে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। যেখানে আবহমান বাঙলার দৈনন্দিন জিনিসপত্রের জোগান থাকবে বিরাট। যেমনঃ রঙ্গিন বাসন, কুলা, ঝুড়ি, হাড়ি, হোগলা, শীতল পাটি, তাঁতের গামছা, শাড়ি, লুঙ্গি।

ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে থাকবে নাগরদোলা, বায়োস্কোপ, মোড়ক যুদ্ধ, এক্কাদোক্কা, কানামাছি, হাঁড়িভাঙ্গা ও হাডুডুর আয়োজন। প্রাচীন বাংলার খাবারের সাথে পরিচয় করাবো জেন জি-কে। তাদেরকে চেনাবো- বাতাসা, সন্দেস, নকুল, মোয়া, মুড়কি, শনপাপড়ি ও হরেক রকম পিঠাপুলি। পরিবেশিত হবে জারি, বাউল, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি।

কর্পোরেট আধিপত্যে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী হালখাতাকে উদযাপনে ফিরিয়ে আনবো আমরা। ব্যবসায়ীদেরকে আগের মতোন হালখাতার কার্ড বানাতে উৎসাহিত করবো। মোসলমান ব্যবসায়ীরা হালখাতায় মিলাদ পড়াবেন। হুজুরকে দিয়া নতুন টালি খাতায় বিসমিল্লাহ লেখাবেন। দোয়া শেষে গরম জিলাপি খাওয়াবেন। সনাতনী ভাইয়েরা তাদের দোকানে ধর্মীয় রীতি মোতাবেক প্রার্থনা করবেন। শঙ্খ ও ঢাক বাজাবেন। নেমতন্নে আমাদেরকে নিমকি ও মিষ্টি খাওয়াবেন।

বিকেলে একটা বৈশাখী র‍্যালি বের করবো। তার সামনে থাকবে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি, পালকি, ঢেকি, লাঙ্গল। বাচ্চাদের হাতে থাকবে কাঠ দিয়ে বানানো কাস্তে, কোদাল, নিড়ানি ও বাঁশের ঝুড়ি। মাথায় থাকবে ছোট্ট মাথাল। আরও অনেক কিছুর প্ল্যান আছে। খুব সংক্ষেপে আপনাদেরকে একটু জানিয়ে রাখলাম। 

এমন একটা আয়োজনে আপনাদের প্রচুর হেল্প লাগবে আমাদের। প্রচুর হেল্প। বাঙলাকে আমরা কলকাতার কৌলিন্য থেকে মুক্ত করে আপামর জনসাধারণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত সেজদার রসম থেকে মাথা তুলে আমরা জনতাকেই জমির মালিক বানাতে চাই। স্টেইকবিহীন আপামরের প্রাণের সংস্কৃতিকেই আমরা বাংলার জাতীয় সংস্কৃতি বানাতে চাই।
 

রিফাত

×