![আন্দোলনে শহীদদের পরিবার প্রতি মাসে পাবে ভাতা আন্দোলনে শহীদদের পরিবার প্রতি মাসে পাবে ভাতা](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/b94d7160-5db1-4cf8-990a-b95b964a9795-2502101420.jpg)
ছবি: সংগৃহীত।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আজ সোমবার সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ২১টি শহীদ পরিবার ও সাতজন আহত ব্যক্তির মধ্যে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে অভিহিত করা হবে এবং তাদের পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। প্রতিটি শহীদ পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা পাবে, যার মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ২০ লাখ টাকা প্রদান করা হবে। এছাড়া, প্রতিটি শহীদ পরিবার প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবে, এবং তাদের কর্মক্ষম সদস্যরা সরকারি ও আধাসরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবেন।
আহতদের জন্য দুটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের ‘ক্যাটাগরি এ’-এর আওতায় এককালীন ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হবে, যার মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে নগদ ২ লাখ এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া, তারা মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা, সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসা সুবিধা এবং মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী দেশি-বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পাবেন। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন সুবিধাও দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, ‘ক্যাটাগরি বি’-এর আওতায় আহতরা এককালীন ৩ লাখ টাকা সহায়তা পাবেন, যার মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১ লাখ এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। তারা মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন এবং সরকারি ও আধাসরকারি কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার পাবেন।
সরকার ইতোমধ্যে ৮৩৪ জন শহীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। আহতদের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা জানি, আপনাদের প্রত্যাশা ছিল আরও আগেই এই প্রাতিষ্ঠানিক কাজগুলো সম্পন্ন হবে। আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না। প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রত্যেক সদস্য আপনাদের ন্যায্য সম্মাননা দেওয়ার জন্য কাজ করেছেন। তবে সংকটকালীন সময়ে দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।”
এই কর্মসূচির মাধ্যমে শহীদ ও আহতদের পরিবার রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে, যা গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সায়মা ইসলাম