ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১

ভারতের তিস্তা আধিপত্যের শেষ ঘণ্টা! বাংলাদেশে নতুন যুগের সূচনা

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভারতের তিস্তা আধিপত্যের শেষ ঘণ্টা! বাংলাদেশে নতুন যুগের সূচনা

ছবি: সংগৃহীত।

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বিরোধ নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এবার তিস্তা মহাপ্রকল্প চুক্তি চীনের সঙ্গে নবায়ন করতে যাচ্ছে, যা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের একক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করবে।

তিস্তা মহাপ্রকল্পের তিনটি মূল লক্ষ্য রয়েছে—বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, নদীভাঙন রোধ ও ভূমি পুনরুদ্ধার। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তিস্তা নদীর বাংলাদেশের অংশে একটি বহুমুখী ব্যারেজ নির্মাণ করা সম্ভব হবে, যা দেশের কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গত ২৫ বছর ধরে তিস্তা প্রকল্পের পরিকল্পনা ও সম্ভাব্যতা পরীক্ষা চললেও বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের অংশে তিস্তা নদী প্রবাহমান হলেও বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে পানির বৈষম্য প্রকট, যা কৃষি ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই চীনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে নদী নিয়ন্ত্রণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরবঙ্গের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে এই মহাপ্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় প্রকল্পটি বারবার আটকে গেছে। চীনের সঙ্গে ফিজিবিলিটি স্টাডি চুক্তি যথাযথভাবে সম্পন্ন হলেও পরবর্তীতে ভারতকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার কৌশল নেওয়া হয়েছিল, যা প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করেছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে তিস্তা মহাপ্রকল্প চুক্তি নবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, চীনের হোয়াংহো নদীর আদলে তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হবে, যেখানে থাকবে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নির্মিত নদী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধ, পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিতকরণ এবং কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

এই চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের পানিসম্পদ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সায়মা ইসলাম

×