![ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ধ্বংস: ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা ও বিচার দাবি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ধ্বংস: ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা ও বিচার দাবি](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/10-2502071800.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
দেশের বিশিষ্ট ২৬ জন নাগরিক সম্প্রতি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এই ঘটনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা এবং সরকারকেই অনেকাংশে দায়ী করেছেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এই মতামত প্রকাশ করেন।
বিবৃতিদাতারা এ–ও বলেন, ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনার দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরেই অনেকাংশে বর্তায়। তাঁরা এসব ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ৫ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িটি ক্রেন ও বুলডোজার ব্যবহার করে নির্মমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁরা দাবি করেন। তাঁরা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে একটি বিবৃতি দিয়ে এ দায় এড়ানো সম্ভব নয়।
বিবৃতিদাতারা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরবতা বা নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ। তাঁরা জিজ্ঞাসা করেন, জনগণের ট্যাক্সের অর্থে পরিচালিত এই বাহিনী কেন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। তাঁদের মতে, এই নিষ্ক্রিয়তা অপরাধের সহযোগিতার সমতুল্য।
তাঁরা আরও বলেন, এই ধরনের গণ-উত্তেজক সহিংসতা ফ্যাসিবাদের কর্মী-সমর্থক এবং তাদের আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকদের নাশকতা সৃষ্টির প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করবে। তাঁরা দাবি করেন, ইতিমধ্যে যা ঘটানো হয়েছে, সেই সব ঘটনাকে আইনের আওতায় এনে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ৩২ নম্বর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বাড়ি ভাঙার সঙ্গে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শক্তি প্রদর্শনের কোনো সম্পর্ক নেই; বরং এটা একধরনের গণ-উত্তেজক সন্ত্রাসের প্রদর্শন বলেই জনগণের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, তরুণদের একাংশকে কোনো দেশি বা বিদেশি অপশক্তি বিপথে পরিচালিত করতে নেপথ্যে সক্রিয় রয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, আনু মুহাম্মদ, খুশী কবির, পারভীন হাসান, ইফতেখারুজ্জামান, শামসুল হুদা, সারা হোসেন, সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সুব্রত চৌধুরী, নুর খান, শাহনাজ হুদা, নোভা আহমেদ, জোবাইদা নাসরীন, মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ, জাকির হোসেন, রেজাউল করিম চৌধুরী, মনীন্দ্র কুমার নাথ, সাঈদ আহমেদ, মিনহাজুল হক চৌধুরী, আশরাফ আলী, শাহাদত আলম, রেজাউল হক, হানা শামস আহমেদ এবং মুক্তাশ্রী চাকমা।
উল্লেখ্য, ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীরা বাড়িটিতে ঢুকে ভাঙচুর করেন এবং এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে সেখানে ক্রেন এনে বাড়িটি ধ্বংস করা হয়।
এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। তিনি আরও বলেন, পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
মো. মহিউদ্দিন