.
বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া বুলডোজার কর্মসূচির তৃতীয় দিন শুক্রবারও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও অফিসও ভাঙচুর করে লোকজন। রাজশাহীতে সাবেক মেয়রের বাসভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। খুলনায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতে নির্মিত স্থাপনা ভাঙচুর ও মালামাল লুট করেছে জনতা। নোয়াখালীতে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ভোলা, বাগেরহাট, ময়মনসিংহ, মাগুরা, মেহেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতার।
রাজশাহী আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বাসভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়। তিনতলা বাড়িটি রাজশাহী নগরের উপশহরে অবস্থিত।
শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে দিয়ে রিক্সাচালক, পথচারী সবাই কোথাও যাওয়ার সময় থেমে যাচ্ছেন বাড়িটির সামনে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবার নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান খায়রুজ্জামান লিটন। ওই সময় বাড়ির সব লুট হয়ে যায়। পরের দিনও বাড়ির দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায় লোকজনদের। এরপর থেকে ভূতুড়ে অবস্থায় ছিল এটি।
চট্টগ্রাম ॥ সীতাকু-ের ছোট দারোগারহাট এলাকায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন একটি কমিউনিটি সেন্টার। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে কারণ নিশ্চিত না হওয়া না গেলেও কেউ অগ্নিসংযোগ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ছোট দারোগারহাট বাজারে অবস্থিত ‘কুটুমবাড়ি কনভেনশন সেন্টার’ নামের এই সেন্টারটির মালিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি এলাকায় থাকেন না।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত অকুস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে কমিউনিটি সেন্টারটির ভেতরে থাকা বেশকিছু চেয়ার এবং সামগ্রি পুড়ে যায়। জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় কিছু ব্যক্তি কমিউনিটি সেন্টারটি দখলের চেষ্টা চালান। সেজন্য এটি কিছুদিন বন্ধ রাখা হয়। জানুয়ারি মাসে ফের খুলে দেওয়ার পর কয়েকটি অনুষ্ঠান হয়। পরিকল্পিতভাবে এতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খুলনা ॥ শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ব্যক্তিগত সম্পত্তির স্থাপনা ভাঙচুর ও মালামাল লুট করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে খুলনার ভৈরব নদের তীরে নগরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান আমলে তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছার নামে দিঘলিয়া উপজেলার ভৈরব নদীর পাড়ে এক একর ৪০ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। জমিটি দেখাশোনা করতেন শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসের। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর জমিটি প্রায় পরিত্যক্ত ছিল। বেগম ফজিলাতুন নেছার মৃত্যুর পর শেখ হাসিনা ও তার বোন এ সম্পত্তির মালিক হন। ২০০৭ সালে তার ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে ওই জমির কথা জানতে পারেন। তবে, এখানে উল্লেখযোগ্য কোনো অবকাঠামো ছিল না। একটি পাট গুদামঘর ও একটি অফিস কক্ষ ছিল। সবশেষ ২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে এসেছিলেন।
এর আগে বুধবার রাতে খুলনা নগরীর শেরেবাংলা রোডে অবস্থিত শেখ হাসিনার চাচার বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা। বৃহস্পতিবার সকালে শেখ বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে রড ও লোহা খুলে নিয়ে যায় সাধারণ মানুষ। শুক্রবারও একই দৃশ্য দেখা যায়।
বরিশাল ॥ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর মা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগমের নামে নির্মিত পার্ক অপসারণের লক্ষ্যে ভাঙচুর করেছে ছাত্রসমাজ। এ সময় বরিশাল প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ ও গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ ভাঙচুরে অংশগ্রহণ করেন। তবে এসময় আশপাশে কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
একইদিন বরিশাল প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে। যদিও ৫ আগস্টের ভাঙচুরে ঘটনায় ম্যুরালের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। এ ছাড়া গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে ছাত্র-জনতা ভাস্কর্যটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দেয়ালের আংশিক ভাঙচুর করা হয়।
নোয়াখালী ॥ বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর এলাকায় সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে তার ছোট ভাইয়ের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। একই সময় উপজেলায় মঈন ইউ আহমেদের গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ সময় পাশের চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেনের বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এ সব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
তবে, এই হামলা-ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নোয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ তথ্য জানিয়ে বলেন, চৌমুহনীর ঘটনাটি সেখানকার স্থানীয় রাজনৈতিক ঘটনা। এর সঙ্গে ছাত্রদের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রদের কর্মসূচি ছিল বৃহস্পতিবার দিনের বেলায়।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শতাধিক কিশোর-তরুণ ও যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদের বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা সাবেক সেনাপ্রধানের ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জাবেদ ইউ আহমেদের দ্বিতল বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় এবং ড্রয়িং রুমের সোফায় আগুন ধরিয়ে দেয়।
একই সময় তারা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন ওরফে ফয়সলের বাড়িতেও হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ও নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদি থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পাননি।
বাগেরহাট ॥ রামপাল উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনের শ্রফলতলার গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের পর আগুন দিয়েছে জনতা। এসময় রামপাল আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন এবং সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও পলাতক সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী রূপা চৌধুরীর নামে প্রতিষ্ঠিত বাগেরহাট পৌর পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর ও নামফলক ভেঙে দেয় বিক্ষুব্ধরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে এ ঘটনা ঘটে। কয়েক’শ ছাত্র-জনতা মিছিল করে শহরের নাগেরবাজারে দড়াটানা নদীর তীরে পৌর পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর, নামফলক ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
ভোলা ॥ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, শেখ মুজিবুর রহমানের তিনটি ম্যুরাল এক্সকেভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে এ ভাঙচুর কার্যক্রম শুরু হয়ে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।
এক্সকেভেটর দিয়ে পৌরভবনের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা মুর্যালের অবশিষ্টাংশ ভেঙে ফেলা হয়। পরে পর্যায়ক্রমে জেলা পরিষদ চত্বর, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। রাত পৌনে ১১টায় শহরের বাংলাস্কুল মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের দোতলা অফিস এক্সকেভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
এর আগে বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভোলার গাজীপুর রোডের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও জনতা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আগুন নেভাতে কাউকে দেখা যায়নি। পরদিন সকালেও আগুন জ্বলে এবং মানুষ ঘরের মালামাল নিয়ে যায়।
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর ॥ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌরমেয়র, বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যন ও ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাত ১০ থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত মুখোশ পরা একটি সংঘবদ্ধ দল এ ঘটনা ঘটায়। এতে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, রাত পৌনে ১০টার সময় ৫-৬টি মোটরসাইকেলে করে মুখোশ পরা ১০-১২ জন লোক তালা ভেঙে ১নং ওয়ার্ড বহেরাতলা সড়কে অবস্থিত আত্মগোপনে থাকা বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এড. বায়েজিদ আহম্মেদ খানের তিন তলা ভবনের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে তারা ভবনের আসবাবপত্র ও লোপতোশকসহ ব্যবহার্য মালামাল পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একই রাতে শহরের কাপুড়িয়া পট্টি রোডে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপাতি ও সাবেক পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের বাসায় পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। এ ছাড়া, নিউমার্কেট এলাকায় জেলহাজতে থাকা ৬নং টিকিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রিপন জমাদ্দারের বাসভবনের দরজার গ্লাস ভাঙচুর করে।
ময়মনসিংহ ॥ নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত চীন মৈত্রী সেতুর শম্ভুগঞ্জ সেতু টোল বক্সসহ নগরীর ব্রিজ মোড়ের জয় বাংলা চত্বর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এক্সকেভেটর দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এসব স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। শেখ হাসিনার পতনের পর ছাত্র-জনতার দাবির প্রেক্ষিতে এর আগে ব্রহ্মপুত্র সেতুর টোল আদায়ও বন্ধ করেছিলেন তারা।
গাইবান্ধা ॥ জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ ছাড়া, ভাঙচুর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, বিভিন্ন ভবনে থাকা নামফলক ও জেলা যুবলীগ নেতার বাসা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ছাত্র-জনতা জড়ো হয়ে শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকার দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর শুরু করে। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বুলডোজার দিয়ে টিন ও ইটের দেয়ালের কার্যালয়টি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্র-জনতা মিছিল করে শহরের থানাপাড়া এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ভাঙচুর করা হয় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহসান হাবীব রাজিবের বাসার গেট ও ভবনের বিভিন্ন জানালার গ্লাসে।
মাগুরা ॥ সাবেক পৌরমেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক খুরশিদ হায়দার টুটুলের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা মাগুরা শহরের নোমানী ময়দান এলাকায় তার বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা তৃতীয় তলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ভাঙচুরের সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না।
মেহেরপুর ॥ জেলার মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সের পাশে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ম্যুরাল ভেঙে ফেলেছে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তারা মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে ম্যুরালটি ভেঙে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে কেদারগঞ্জ বাজারে প্রধান সড়কের মাঝখানে ফেলে রাখে। সরকার পরিবর্তনের পর এর আগে মুজিবনগর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে জনতা। ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুজিবনগর থানা পুলিশ।