ছবি : সংগৃহীত
জনতা আবারও বুঝিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জন্য ডেড ইস্যু বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। সম্প্রতি জিটিভি আয়োজিত এক টকশো আলোচনায় একথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, এটা নিয়ে আপনি যতই নাড়াচাড়া করবেন, যতই জলঘোলা করবেন, আইন দেখান, বাস্তবতা দেখান, যেটাই দেখান, যত কথাই বলেন।
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, মাসুদ কামাল যেটা বললেন, যে আইন নেই, আপনারা বলছেন প্রতিহত করবেন, কিন্তু আইন তো নেই।তাহলে কী হচ্ছে বিষয়টা?
জবাবে তিনি বলেন, আপনি যদি আইনের কথা বলেন, তাহলে আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী। আপনি যদি আইনের কথা বলেন, তাইলে আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করে আমরা অপরাধ করছি। সবসময় সবকিছু আইন দিয়ে চলে না। আইন মানুষের জন্যে। মানুষের প্রয়োজনেই আইন তৈরি হয়। মানুষ যেটা চায়, আইনের মধ্যে একটা বিষয় হচ্ছে প্রথা, বিশ্বাস। এগুলা একসময় আইনে পরিণত হয়। বাংলাদেশের মানুষ যদি মনে করে যে, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি করতে পারবে না, আসলেই পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ যদি মনে করতো আওয়ামী লীগ নেতাদের জাস্ট বিচার হবে, বাকি সবাই হচ্ছে রাজনীতি করতে পারবে, তাহলে ওই যে ওয়ার্ডের মেম্বার কিংবা তার সমর্থক এগুলো সবগুলো বাড়িঘরেই থাকতো। এরা সবগুলো সেদিন পাঁচ তারিখে পালাতে হতো না।
প্রত্যেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে কারণ বাংলাদেশের মানুষ মনে করছে যে, আসলেই আওয়ামী লীগ যারা করছে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করার অধিকার নেই।
পরবর্তী প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়, মানুষ মনে করা একটি বিষয় এবং সরকার সরকারের উদ্যোগ নেওয়া আরেকেটি বিষয়, আপনি এটি কীভাবে দেখেন?
সরকারের উদ্যোগের জন্য সরকারকে আমরা চাপ দিচ্ছি। সরকার কি করবে, করবে। সরকার না করলে সরকারও ঐদিকেই আগাবে, আওয়ামী লীগের মত। বাস্তবতা সেটা যে সরকারই হোক যদি আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থানে নেয়, আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়, যদি এই সরকারও করে, সেই সরকারের প্রতিও মানুষ অনাস্থা জানাবে। আপনি মনে করেন, কালকে শাহবাগে আওয়ামী লীগ একটি সমাবেশ করবে। আপনি দেখেন না, বাংলাদেশের মানুষ এটাকে নেয় কিনা। সরকার যে ধরনের হোক সরকার কিচ্ছু করলো না, পারবে করতে!
মনে করেন, আগামী ছয় মাস পরে যে নির্বাচনটা হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একজন এমপি প্রার্থী, নৌকা মার্কা নিয়ে, নৌকা স্লোগান দিয়ে, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে ভোট চাইতে যাচ্ছে, আপনি একটু ইমাজিন করেন, বাংলাদেশে তার কি অবস্থা হবে।
তাহলে আপনি একটা জিনিস বাস্তবতায় বুঝেন, একটা প্রশ্নে বাংলাদেশের বিএনপি জামায়াত, আমি নেতাদের কথা বলছি না, যারা জাস্ট ভাষণের জন্য অনেক কথাই বলে, একসময় একেক কথা বলে, কিন্তু কর্মীদের কথা বলছি।
আমি আজকে দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদলেরও মিছিল গিয়েছে বঙ্গবন্ধু ৩২ এর দিকে, এটা ভাঙ্গার জন্যে জিয়ার সৈনিক স্লোগান দিতে দিতে। বাংলাদেশের এই জায়গায়, এই প্রজন্ম, আপনার এখানে আমি বলব যে, সর্বশেষ তিনটা প্রজন্ম, যদি আপনি ১৬ থেকে ৪৫ পর্যন্ত ধরেন, তিন থেকে চারটা প্রজন্ম উঠবে, এই তিন-চারটা প্রজন্ম বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে মেনে নিবে না। এখন এরপরে এর উপরের প্রজন্মের কিছু অংশ মেনে নিতে চাইবে, বিভিন্ন ধরনের সুশীলতা দেখিয়ে চাইবে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তারা কি আসলে দাঁড়াতে পারবে কিনা!
মো. মহিউদ্দিন