ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১

রাষ্ট্র পরিচালনায় জবাদিহিতা চাইলেন তাশরিফ খান!

প্রকাশিত: ১১:১৩, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাষ্ট্র পরিচালনায় জবাদিহিতা চাইলেন তাশরিফ খান!

বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক ও সমাজসেবক তাশরিফ খান একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় জবাদিহিতা চেয়ে এবং দেশের বিভিন্ন কাঠামোগত ও প্রশাসনিক সমস্যার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে পোস্ট করেন।সম্প্রতি সারাদেশে ভাঙ্গচুর এবং অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন এরকম বিশৃঙ্খল পরিবেশ আর তৈরি না করে দেশের উন্নয়নে মনোযোগ দিতে,দেশ গঠনে সহযোগিতা করতে।
গায়ক ও সমাজসেবক তাশরিফ খান তার বক্তব্যে উঠে এসেছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইনশৃঙ্খলা এবং অর্থনীতির মূল সমস্যা, যার সমাধান না হলে জনগণের ভোগান্তি অব্যাহত থাকবে।
তাশরিফ তার পোস্টে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চল ও মফস্বলের হাসপাতালগুলোর দুর্বল অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,“গ্রামে,গঞ্জে আর মফস্বলের হাসপাতালগুলো আর চিকিৎসা ব্যবস্থাটা উন্নত করতে আর কত যুগ অপেক্ষা করবো আমরা? একটু ফোকাস করে ঢাকার উপর চাপ কমান।”


রাজধানীর ভয়াবহ যানজট দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন তাশরিফ। তিনি দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন,“রাস্তার ট্রাফিক নিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করেন প্লিজ। মানুষের সময় বাঁচলে, মানুষ আরও প্রোডাক্টিভ হবে। দেশ উন্নতির গতি বেড়ে যাবে জ্যামেতিক হারে”


বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাশরিফ বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নতি যেভাবেই হোক নিশ্চিত করার প্ল্যান করে বাস্তবায়ন শুরু করেন। আশ্বাসের কথা শুনতে শুনতে মানুষের কান পঁচে গেছে বহু আগে। বাস্তবায়ন শুরু করেন, কি প্ল্যান করতেছেন না করতেছেন পাবলিক রে জানায় একটু মানসিক শান্তির ছিটাফোঁটা দেন। শিক্ষা টা যতটুক সম্ভব প্রাক্টিক্যালি শিখানোর ট্রাই করেন। যেন বই পড়ে সাঁতার শিখে আল্টিমেটলি পানিতে গিয়ে না ডুবে সেইদিকে ফোকাস করা যায় কি না দেখেন।”


বাজারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দমন করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তাশরিফ। তিনি বলেন,“বাজারের উর্ধ্বগতির লাগাম আস্তে আস্তে পারমানেন্টলি টেনে ধরার ব্যবস্থা করেন। যদু মধু কারা সিন্ডিকেট করে এইটা বের করতে ইলন মাস্কের হেল্প লাগবে না নিশ্চই। পুলিশ, আর্মি, র‍্যাব ইত্যাদি সহ আরও যারা আছে তাদের কে এইসব প্রজেক্টে আরও এক্টিভেট করে প্রয়োজনে পারফর্মেন্সের উপর পুরষ্কার দিয়ে হইলেও এই ক্রিমিনাল গুলারে ধরে কঠিন পেনাল্টি নিশ্চিত করেন প্লিজ।”


আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ঘুষের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের আহ্বান জানিয়ে তাশরিফ বলেন,“কয়টা চাঁদাবাজি আর ছিনতাই এর লোক ধরে বড় শাস্তি দিতে পারছেন এগুলা একটু পাবলিকলি সামনে আনেন। কারণ এসব দেখতে দেখতে আমরা ভীত হইছেছি আরও ভয় কাজ করতেছে।এদেরকে ধরে কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করেন, দরকার হলে নতুন আইন করে হোক বা যেভাবেই হোক এগুলা মেইক শিউর করেন।”

তিনি আরো জানান,ঘুষের চক্র সহ আরও যত রকমের অপরাধ হয়েছে হচ্ছে, সবকিছু ঠিক করতেই যদি চান তাহলে সবার আগে আইনের শাসন কঠিন করেন। মুখে মুখে না, বাস্তবে কঠিন করেন।এই কঠিন শুধু জনগণের জন্য কঠিন না, প্রশাসনের জন্যেও কঠিন এবং আমলাতন্ত্র সহ যত তন্ত্র মন্ত্র আছে সবার জন্য কঠিন করেন। 
তাশরিফ খান রাষ্ট্র পরিচালনায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, সরকারি দায়িত্বশীলতা কেবল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, বরং সাধারণ জনগণের প্রতিও জবাবদিহিতা থাকতে হবে।


তার বক্তব্যে স্পষ্ট, দেশ জনগণের টাকায় চলে, তাই জনগণের কাছে সরকারের কর্মকাণ্ড স্বচ্ছ হওয়া জরুরি। তিনি বলেন,“একাউন্টিবিলিটি লাগবেই। সব সেক্ট্রোরকে জবাব দিহিতার আন্ডারে আনতেই হবে।পাবলিকের টাকায় দেশ চলে সো জবাবদিহিতা শুধু নিজের বস রে করলে হবে না, পাবলিকরেও করতে হবে। প্রয়োজনে ওয়েবসাইট করেন যে কয়টা লাগে এবং এই ওয়েবসাইটগুলোতে যে যার কাজের আপডেট দিতে থাকবে যা পাবলিক ঢুকে চাইলে চেক করে ধরতে পারে। নিজের সুপিরিয়র রে ঘুষের ভাগ দিয়ে বেচে যাওয়ার কালচার টা পারমানেন্টলি কবর দিতে হবে।
শোনেন, দিনশেষে আমরা রাস্তায় ময়লা ফেলবো এবং তার জন্য সরকার রে গালি দিব। আপনি মানেন আর না মানেন আমরা এটা করবোই। আমাদের পশ্চাৎ দেশে কাঁচা বাঁশের কৈঞ্চা দিয়ে বাড়ি না দিলে আমরা।”


তাশরিফ খানের এই সোচ্চার বার্তা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের মধ্যে ইতিবাচক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তার বক্তব্য স্পষ্ট: উন্নতি চাইলে এখনই বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। শুধুমাত্র আলোচনা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে নয়, বরং কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব।প্রশাসনের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের লাগাম টানা সম্ভব হবে, যা দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।


আফরোজা

×