ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

জুলাই গণঅভ্যুত্থান

বিচার ও স্বীকৃতি দাবিতে হতাহতদের পরিবারের শাহবাগ অবরোধ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিচার ও স্বীকৃতি দাবিতে হতাহতদের পরিবারের শাহবাগ অবরোধ

.

জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার নিশ্চিত এবং সরকারি স্বীকৃতির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন হতাহতদের পরিবার। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে আশপাশের এলাকাজুড়েও যানযট সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের হাতে নিহতদের ছবি এবং দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। তারা অনেকেই উদাসীনতা ও অবহেলার অভিযোগ আনেন  সরকারের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করারও আহ্বান জানান। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারে নেতাদের খুনি আখ্যা দিয়ে তাদেরকেও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার আগে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। যে আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে সেগুলো হলো- শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক এবং রবিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের বৈঠক হবে।
এ সময় এক অভিভাবক বলেন, সন্তানের হত্যার বিচার ও সরকারি স্বীকৃতির দাবিতে অনেকের দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছি, কিন্তু সহানুভূতির পরিবর্তে পেয়েছি অবহেলা ও অসম্মান। পরিবারগুলোর আরও অভিযোগ, তারা গত কয়েক মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাদের সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
জুলাই গণহত্যায় চলমান বিচারিক কার্যক্রমেরও সমালোচনা করেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টিকে ‘সার্কাস’ বলেও অভিহিত করেন তারা। আন্দোলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, মারাত্মক ক্র্যাকডাউনের আদেশ দানকারী এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী অনেকেই এখনো বিচারের সম্মুখীন হয়নি। অধিকাংশ অপরাধী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা শহীদদের স্মৃতির প্রতি অপমান। দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন তারা।
সন্ধ্যায় শাহবাগে উপস্থিত হয়ে সারজিস বলেন, যত দ্রুত ব্যবস্থা শহীদ পরিবারদের সহায়তা করা যেত, তত দ্রুত হচ্ছে না। শহীদের পরিবার এখানে এসেছেন, যা আমাদের জন্য লজ্জার। শুক্রবার শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলব এবং রবিবার প্রধান উপদেষ্টা সাক্ষাৎ করবেন। ওইদিন শহীদ পরিবারের যৌক্তিক দাবিগুলো তুলে ধরা হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার যদি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করতে না পারে, তাহলে এটি হবে এই সরকারের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা। আমরা সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করে নেব। সরকারকে শহীদ পরিবারের প্রতিটি যৌক্তিক দাবি পূরণ করতেই হবে। 
এ সময় কয়েকটি দাবি জানান। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- প্রতিটি হত্যার বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ১০ দিনের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে; শহীদ ও আহত ভাইদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে; 
শহীদ পরিবারের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে;  শহীদ পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ন্যায্য সম্মানী দিতে হবে; শহীদ পরিবারের মাসিক সম্মানীর দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে।

×